চকরিয়ায় পাউবো’র জমিতে বাণিজ্যিক স্থাপনা
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার সুযোগ কাজে লাগিয়ে গেল দুই দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত অন্তত ২০ কোটি টাকার মূল্যের জায়গা বেহাত হয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা স্থানীয়ভাবে দাপট দেখিয়ে প্রভাবশালী লোকজন অবৈধ দখলে নিচ্ছে পাউবো’র এসব জায়গা। পরবর্তীতে ওই জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভুমি শাখার সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কিছু কিছু পরিমাণ জায়গা একসনা লিজ নিয়ে বেশিরভাগ উপকারভোগী লোকজন বিভিন্ন সময়ে উল্লেখিত জায়গা এবং মাথাখিলা অংশে স্থায়ী বাণিজিক স্থাপনা গড়েছেন। এ অবস্থার কারণে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা, বদরখালী, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, পশ্চিমবড় ভেওলা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, বরইতলী, সাহাবিলের চোয়াঁরফাড়ি, ফাসিয়াখালীর দিগরপানখালী, বিএমচর ইউনিয়ন এবং চকরিয়া পৌরসভার ভাঙ্গারমুখ, এক নম্বর বাঁধ ও আশপাশ এলাকায় বেহাত হতে গেছে পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীণ বিপুল পরিমাণ ভু-সম্পদ। দখলে নেয়া বেশির ভাগ জায়গায় ইতোমধ্যে একাধিক বাণিজ্যিক মার্কেট, দোকানপাট ও বিপুল পরিমাণ জনবসতি গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার উপকুলীয় বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশে এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার জায়গা রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন বিভিন্ন সময়ে কৌশলে পাউবো’র ভুমি শাখার কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নানা কায়দায় ইতোমধ্যে বেশিরভাগ জায়গা দখলে নিয়েছে। পরবর্তীতে দখলে নেয়া জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দোকানপাট ও বসতবাড়ি। সাহারবিল ইউনিয়নের চোঁয়ারফাড়ি বাজার এলাকায় পাউবো’র জমিতে তৈরি করা হয়েছে বাণিজ্যিক মার্কেট। এছাড়াও চকরিয়া পৌর শহরের বাস টার্মিনালের দক্ষিনে ভাঙ্গারমুখ-দিগর পানখালী সড়কের মাথায় কয়েকযুগ আগে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক বাণিজ্যিক মার্কেট। স্থানীয় লোকজন জানান, বেড়িবাঁধ দখল করে নির্মিত এসব মার্কেটের প্রায় দোকান লাগিয়ত দেয়া হচ্ছে এখন এক থেকে দেড়লাখ টাকায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় মার্কেট গড়ে তোলা হলেও কারো কাছে জমি মালিকানা রয়েছে এমন বৈধ কাগজপত্র নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে, উপজেলার যেসব এলাকায় বেড়িবাঁেধর উপর দোকানপাট ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে সব গুলো অবৈধ। তাদেরকে পাউবো’র পক্ষ থেকে অনুমোদন বা অনুমতি দেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, চকরিয়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় অনেকবছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বেশ কিছু জায়গা শর্ত সাপেক্ষে লিজ দেওয়া হয়েছে।
লিজের শর্ত মোতাবেক আমাদের প্রয়োজনে ওই জায়গা ছেড়ে দিতে হবে এমন কথা বলা আছে। তিনি বলেন, লীজের জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে লিজ প্রাপ্ত জায়গায় কেউ স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।