মামলা ও হুমকিতে চরম আতঙ্কে কর্মকর্তা-কর্মচারী
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »
করোনাকালীন জবরদখলের ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে। ইতোমধ্যে পার্কের সংরক্ষিত জায়গা দখলে নিতে অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে একটি চক্র। জবরদখল চেষ্টায় যাতে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারী বাধা দিতে না পারে সেইজন্য তাদের বিরুদ্ধে বনপ্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ এবং আদালতে মামলা করেছে অভিযুক্ত চক্রটি।
পার্কের লোকজন দাবি করেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে বনপ্রশাসনে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মানসিক চাপে রেখে অভিযুক্তপক্ষ ইতিমধ্যে পার্কের সীমানা লাগোয়া খাস খতিয়ানের বিপুল জায়গা জবরদখলে নিয়ে সেখানে অবৈধ বাড়ি নির্মান করেছে। পরবর্তীতে চক্রটি দখলে নেয় পাশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কুমির বেস্টনীর পানি চলাচলের ছড়াখালের জমি। অভিযোগ উঠেছে, ভূয়া কাগজপত্র সৃজনের মাধ্যমে চক্রটি সাফারি পার্কের ওই জায়গা জোর করে দখলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানা ও আদালতে দুইটি নালিশী মামলা দায়ের করে। পার্কের জায়গা দখলের ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বিটকর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, সর্বশেষ অভিযুক্ত চক্রটি পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বনপ্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ইতিমধ্যে পার্কের সীমানা লাগোয়া খাস খতিয়ানের বিপুল জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ করেছে। পরবর্তীতে চক্রটি দখলে নেয় পার্কের কুমির বেস্টনীর পানি চলাচলের ছড়াখালের জমি। সেখানে তাঁরা মৎস্যচাষ করছে। তিনি বলেন, পার্কের জমি দখলে নিয়ে নিজেদের অধীনে রেখে অন্যজনকে ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বেচাবিক্রিও করে আসছে।
এমনকি জায়গা দখলে নিতে পার্কের দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধে দেয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা। পার্কের বনপ্রহরী মো. ফখরুল ইসলাম (বনপহরী) জানান, তাকে ও পরিবারের সদস্যদেরকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাজী নাছির উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দেয়া হলে বারবার ফোনটির সংযোগ লাইন বন্ধ পাওয়া যায়। সেইকারণে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মাহাজারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইতোপুর্বে অভিযুক্ত নাছির উদ্দিন ও তার লোকজন জায়গা দখলে নিতে নানাচেষ্টা চালাতে শুরু করলে এ ঘটনায় পার্কের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৪৭৫/২০২০ তারিখ ১১-০৭-২০২০) দায়ের করি।
এছাড়াও পার্কের কুমির বেস্টনীর ছড়াখাল দখলের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (সিআর ২৯/২০২০) দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়ায় বর্তমানে তাঁরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় দায়িত্ব পালনে চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পার্কের বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী।