১০ বছরে হুইলচেয়ার, সেলাই মেশিন ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বিতরণ, শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব গ্রহণ
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় দিনে দিনে অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পিস ফাইন্ডার’। সমাজহিতৈষীমুলক কর্মকা-ের বদৌলতে সংগঠনটি এখন অসহায় মানুষের অন্যরকম ভালোবাসা হিসেবে রূপ পেয়েছে। কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে সংগঠনটি যাত্রা করলেও কাজের মাধ্যমে জানান দিয়েছে দেশের সচেতনমহলে। মানবিক যোদ্ধা আদনান রামিমের হাতধরে ‘শান্তিতে আমরা সবার পাশে- সেøাগান নিয়ে ২০১০ সালের পহেলা মে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। সেই থেকে ২০২০ সালে পূর্ণ হয়েছে দশক। শুরু থেকে সংগঠনটি কাজ করছে মনের আনন্দে ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে। তাদের নেই কোন অসম প্রতিযোগিতা, নেই প্রতিদান কিংবা পুরস্কারের আশাও। দশ বছরে ‘পিস ফাইন্ডার’র মানবিক কাজের হিসাবটাও কিন্তু কম নয়। ইতোমধ্যে সংগঠনটি অসহায় প্রতিবন্ধীদের মাঝে বিতরণ করেছে ৭৪টি হুইলচেয়ার, দরিদ্র পরিবারের মাঝে ১১ টি সেলাই মেশিন, ৩টি ওয়াকার, প্রতিবন্ধীদের সার্জিক্যাল সাপোর্ট, গড়ে দিয়েছে ২টি ভ্রাম্যমাণ দোকান, গ্রহণ করেছে ১১ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীর নিয়মিত পড়ালেখার দায়িত্ব।এমনকি প্রতিবছর একজন করে এতিম শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় ‘পিস ফাইন্ডার’। সঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম, দেশব্যাপী অগণিত রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপন, জরুরি মুহুর্তে স্বেচ্ছাসেবী, দুর্যোগে জরুরি ত্রাণ বিতরণসহ প্রতিটিক্ষেত্রে মানবিক কাজের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে।সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর সংগঠনটির উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে হুইলচেয়ার, সেলাইমেশিন ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বিতরণ করা হয়েছে। চকরিয়া থানা রাস্তার মোড়স্থ সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্সের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে ৬ জন প্রতিবন্ধীকে হুইলচেয়ার এবং ১জন করে সেলাইমেশিন ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ৬ জন প্রতিবন্ধীকে হুইলচেয়ার এবং সেলাইমেশিন ও ভ্রাম্যমাণ দোকান তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে পিস ফাইন্ডারের সদস্য ছাড়াও শুভাকাঙ্খী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পিস ফাইন্ডারের ভালো কাজের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগামীতে তাদের সবধরনের ভালো কাজে পাশে থাকব।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পিস ফাইন্ডারের প্রতিটি কর্মকা- ভাল লাগার মতো। ‘পিস ফাইন্ডার’ সম্পর্কে আদনান রামিম বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি, মানবিকতার বার্তা দিয়েছি। এই দশ বছরে আমাদের সহযোদ্ধা হয়ে অনেকেই আসছেন, আবার অনেকেই হাসছেন, অনেকই ভালোবাসছেন, আলোচনা করছেন, করছেন সমালোচনা।
তিনি বলেন, এই দশ বছরে আমরা ক্লান্ত হইনি, বরং আরও বেশি দায়বদ্ধ হয়েছি। আমরা থামতে চাইনা। আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে অনন্তকাল। আগামীতেও মানবিক কাজে ব্রত থাকতে চাই সম্মিলিত উপায়ে। আমাদের প্রচেষ্টা সুন্দর ও উন্নত সমাজ বিনির্মাণের জন্য।’’