সুপ্রভাত ডেস্ক »
মিয়ানমারের এক সামরিক আদালত দুর্নীতির পাঁচটি অভিযোগে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চিকে আরও ৭ বছরের কারাদ- দিয়েছে। এ দণ্ড নিয়ে সু চির মোট কারাদ- দাঁড়াল ৩৩ বছরে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী তার সরকারকে উৎখাত করার পর দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাবেক এই নেত্রী রাজধানী নেপিডোতে গৃহবন্দি হয়ে আছেন।
গত দেড় বছরে ১৯টি অভিযোগে তার বিচার হয়েছে; বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই বিচারকে কলঙ্কজনক অ্যাখ্যা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সু চিকে মুক্তি দিতে মিয়ানমারের জান্তার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজ।
শুক্রবার নোবেলজয়ী এ নেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা সর্বশেষ ৫ অভিযোগের রায় ঘোষিত হয়। সরকারি এক মন্ত্রীর জন্য হেলিকপ্টার ভাড়ায় নিয়ম অনুসরণ না করায় সামরিক আদালত সু চিকে দোষী সাব্যস্ত করে।
আগের যে ১৪টি অভিযোগে সু চি দোষ্য সাব্যস্ত হয়েছিলেন তার মধ্যে কোভিড জনসুরক্ষা বিধিমালার লংঘন, ওয়াকিটকি আমদানিতে দুর্নীতি ও সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গও আছে।
চলতি বছর বিভিন্ন অভিযোগে তার রুদ্ধদ্বার বিচারে গণমাধ্যম বা সাধারণ জনগণকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী তার আইনজীবীদের ওপরও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা দিল। ৭৭ বছর বয়সী সু চি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
গত বছর ক্ষমতা দখলের পর এ পর্যন্ত মিয়ানমারের জান্তা যে ১৬ হাজার ছয়শরও বেশি মানুষকে আটক করেছে তার মধ্যে সু চি ও তার দলের অনেক সদস্যই আছে; আটকদের ১৩ হাজার এখনও কারাগারে, বলছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনারস।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধ ও সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছিল। এই আহ্বানের পক্ষে রাশিয়া, চীন ভোট না দিলেও প্রস্তাবটির খসড়ায় কোনো সংশোধনী আনতে নিজেদের ভিটোক্ষমতাও ব্যবহার করেনি তারা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর আগে বলেছিল, সু চির ওপর লাগাতার আইনি অত্যাচারই দেখাচ্ছে সামরিক বাহিনী কীভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বা বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক অভিযোগ আনতে আদালতকে কাজে লাগাচ্ছে।
মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং বেসামরিকদের গ্রামে বিমান হামলা চালানোরও অভিযোগ আছে। গত বছর অভ্যুত্থানের পর ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমনপীড়নে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ছয়শর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অনেকে অনুমান করছে।