নিজস্ব প্রতিবেদক »
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দিন দিন আধুনিক হচ্ছে। নতুন পদাতিক ডিভিশন, প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আধুনিকায়ন হচ্ছে সেনাবাহিনী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আধুনিক সেনাবাহিনী গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭৪ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
তিনি গতকাল চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮১তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ১০৩ জন ক্যাডেটের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
নবীন ক্যাডেটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তোমাদের ওপর ন্যস্ত হলো দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে নবীন সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতার পররাষ্ট্র নীতি হিসাবে আমরা ‘শান্তিতে বিশ্বাস করি, এবং সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই নীতিতে বিশ্বাস করি। তবে কখনো বাইরে থেকে শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার সক্ষমতা আমরা ইতিমধ্যেই অর্জন করেছি। একইসাথে দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করেছে। এই সুনাম ধরে রাখতে হবে।
সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীতে ৩টি নতুন পদাতিক ডিভিশন ও প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক সাঁজোয়া যান এবং গোলন্দাজ কোরে মাঝারি ও দূরপাল্লার এমএলআরএস রেজিমেন্ট। আকাশ বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় সোরাড, ভিসোরাড ও সর্বাধুনিক অরলিকন মিসাইল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আকাশ প্রতিরক্ষায় সূচিত হয়েছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। অত্যাধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও সিগন্যাল সরঞ্জামাদি ছাড়াও বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, বিমান, মডার্ন ইনফ্যান্ট্রি গেজেট এবং আরও নানাবিধ অস্ত্র-সরঞ্জামাদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সংযুক্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃতি ক্যাডেটদের পুরস্কৃত করেন। সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার আব্দুল্লাহ আল ইসলাম ‘সোর্ড অব অনার’ এবং কোম্পানি জুনিয়র আন্ডার অফিসার ইমরুল কায়েস সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন।
৮১তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ৯৫ জন বাংলাদেশী, ৭ জন ফিলিস্তিনি, একজন শ্রীলংকান ক্যাডেটসহ ১০৩ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। বাংলাদেশি ৯৫ জনের মধ্যে ৮৮ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী ক্যাডেট রয়েছেন।
সব মহলের প্রশংসা অর্জন করেছে সেনাবাহিনী
বিএমএতে ১০৩ ক্যাডেটের কমিশন লাভ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী