চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ বর্তমানে উন্নয়নের মহাসড়কে। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ ও চোরাচালানসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে। যে কোন অপরাধ রোধে প্রশাসন থাকবে জিরো টলারেন্স। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে আসা মাদক, অস্ত্রের চোরাচালান ও তেল পাচার রোধে সড়ক পথের পাশাপাশি নৌ-পথে টহল অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে আরও আন্তরিক হতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।
সরকারে দেয়া নির্দেশনা অমান্য করা যাবে না। শব্দ দূষণ রোধে গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহারের বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হবে। যে সকল দোকানে হাইড্রোলিক হর্ন বিক্রি করে প্রয়োজনে সেখানেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া মহাসড়ক, মহানগর ও পৌর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অবৈধ থ্রি-হুইলার বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চোরাচালান নিরোধ আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভা, বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা, বেসরকারি পর্যায়ে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রসমূহ মনিটরিং সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভা, জেলা প্রশাসকগণের সমন্বয় সভা, বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণের সাথে সমন্বয় সভা, কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত সভা, বিভাগীয় বিনিয়োগ ও ব্যবসায় উন্নয়ন সহায়তা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস পৃথক সভাগুলোর আয়োজন করেন। সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বিগত সভার সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতিগুলো উত্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের কোনো নাগরিক বা রোহিঙ্গাও যাতে নতুন করে এদেশে অনুপ্রবেশ করতে ও এখান থেকে অন্য কোথাও পািলয়ে যেতে না পারে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সীমান্তবর্তী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চোরাচালান নিরোধ কমিটির অনুষ্ঠিত সভা ফলপ্রসূ হওয়ার ব্যাপারে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভায় তিনি বলেন, সড়ক, নৌপথ ও সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদকের সাথে অস্ত্রের চালান আসতে পারে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারও হতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে যাতে কোন ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টি বিশেষ নজরে রাখতে হবে। সমুদ্রপথে নৌ টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের অতন্দ্র প্রহরীর মত দায়িত্ব পালন করতে হবে। চোরাচালান প্রতিরোধে পর্যাপ্ত চেকপোস্টের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে হবে।
বিভাগের ১১টি জেলার জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রতিমাসে টাস্কফোর্স অভিযানের হার বৃদ্ধিসহ তথ্যাদি যথাসময়ে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে প্রেরণ এবং অভিযান পরিচালনায় জেলা প্রশাসকগণকে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক সভাগুলোতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আনোয়ার পাশা, কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের বিভাগীয় পরিচালক নবাব ইসলাম হাবিব, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ, দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান (চট্টগ্রাম), ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি (বান্দরবান), দেওয়ান মাহবুবুর রহমান (নোয়াখালী), মো. সহিদুজ্জামান (খাগড়াছড়ি), কামরুল হাসান (চাঁদপুর), মো. শাহীন ইমরান (কক্সবাজার), শাহগীর আলম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান (ফেনী), মো. শামীম আলম (কুমিল্লা), মো. আনোয়ার হোসাইন আকন্দ (লক্ষ্মীপুর), মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (রাঙামাটি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান পাটওয়ারী, বিআরটিএ’র পরিচালক মো. শফিকুজ্জামান ভূঁইয়া, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ.স.ম মাহাতাব উদ্দিন, বিসিক’র আঞ্চলিক পরিচালক মো. মোতাহার হোসেন, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজুদ্দিন মো. আমগীর, ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, মহানগরীর অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট স্বরূপ পাল, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মো. রেজাউল করিম, রনজিত কুমার শীল প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি