নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগড় »
খাগড়াছড়ির রামগড়ে সেতুর সংযোগস্থলে মাটি ভরাট না করায় এবং সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু। ফলে মানুষের দৈনন্দিক কাজ কর্মে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছে ৪ গ্রামের প্রায় ২০০০ মানুষ। পৌরকর্তৃপক্ষ সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানালে ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন দীর্ঘদিন ধরে সেতু এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কেউই এলাকায় আসেনি। পৌরসভা এবং ইউনিয়নের মাঝামাঝিতে অবস্থিত হওয়ায় এলাকায় উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থেমে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। জানা যায়, রামগড় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শেষ প্রান্তে ও রামগড় ১নং ইউনিয়নের শুরতেই অংহলা পাড়া গ্রামে সেতুটি অবস্থিত। এই সেতু নির্মাণে ২০১০-২০১১ সালের অর্থ বছরে ত্রাণ ও পূনর্বাসন অধিপ্তরের কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেতুর মূল অংশের কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, ৪টি গ্রামের প্রায় ২০০০ মানুষের এক মাত্র চলাচলের কাঁচা সড়ক এটি। রাস্তার মাঝে গর্ত এবং ধুলাবালির কারণে রাস্তায় চলাচলের কোন উপায় নেয়।
ব্রীজটির মূল অংশের কাজ শেষ হলেও দুপাশের সংযোগ সেতু নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ব্রীজের সাথে রাস্তার সংযোগ অংশ না থাকায় অংহলা পাড়া, মুসলিমপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ বর্ষার সময় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। উপজেলার অংহলা পাড়া গ্রামের চাইল্যাহ মারমা বলেন,অনর্থক সরকারি টাকা অপচয় করে রাস্তাবিহীন এই সেতু নির্মাণ করেছেন। কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে জগন্নাথ পাড়ার মোড় ও আদর্শ গ্রামের রাস্তা দিয়ে অনেকদূর ঘুরে বাজারে নিয়ে যেতে হয়। অথচ এই ব্রীজটি ব্যবহারের উপযোগী হলে এবং রাস্তাটা ঠিক থাকলেই পণ্য সহজে কম খরচ এবং পরিশ্রমে আনা নেয়া করা যেতো। ফজলুল করিম নামের আরেক বাসিন্দা জানান,আমরা এই কয়েকটি গ্রামের মানুষ পৌরসভা ও ইউনিয়নের মাঝখানে হওয়াতে খুবই অবহেলিত,আমাদের গ্রামে নেই উন্নত মানের যোগাযোগব্যবস্থা। আমরা ১০ বছরেও পাইনি বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া। আমরা অনেক বার কষ্টের কথা স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর আয়শা আক্তার জানান, রামগড় পৌরসভার অধীনে যে এলাকা রয়েছে সেটির নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বরাদ্দ আসলেই দ্রুত এ রাস্তার কাজ শুরু হবে। রামগড় প্রেসক্লাব সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা তিনি শুনেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব কারবারি জানান, তার আওতাধীন গ্রামগুলোতে সড়ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। সড়ক বিহীন এই সেতু কীভাবে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে এমন অভিযোগের জবাবে রামগড় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনসুর আহমেদ জানান, তার যোগদানের পূর্বে প্রকল্পটির কাজ হয়েছে। কি কারণে সংযোগ সেতু হয়নি তিনি জানেন না।