চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭১’র ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধরত বাংলাদেশকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত ও ভুটান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধরত রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ সরকার এবং বাঙালি জাতিকে ভারতের এই ঐতিহাসিক স্বীকৃতি এক বিশাল উদ্দীপনায় উজ্জীবিত করেছিল। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈধতা দিয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ত্বরান্বিত করেছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশের এককোটি সহায়সম্বলহীন শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক জনমত সংগঠিত করেছে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ১৭ হাজার সদস্য শহীদ হয়েছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোন দেশকে স্বাধীন করার জন্য এ ধরনের আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত বিরল ঘটনা। বাংলাদেশকে ভারতের কূটনৈতিক স্বীকৃতির অন্যতম কারণ ছিল ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের প্রতি দু’দেশের অঙ্গীকার। রক্তের বন্ধনে রচিত এই বন্ধুত্ব শত প্রতিকূলতার ভেতরও অটুট রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে কোন ছাড় নেই উল্লেখ করে মেয়র আরো বলেন, চেতনা অনুভবের বিষয়, এটি দেখা ও লেখা যায় না কিন্তু হৃদয়ে অনুভব করা যায়। এই অনুভূতির মানুষগুলি সংখ্যালঘু হলেও তাঁরাই সত্যিকারার্থে চেতনাকে লালন করেন। তাঁরাই আমাদের শক্তি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ভারতের কূটনৈতিক স্বীকৃতির ৫১তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, চট্টগ্রামের উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং লেখক-সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবিরের ‘দুঃসময়ের বন্ধু’ চলচ্চিত্র প্রদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের ৮ম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি’র সদস্য সচিব ও লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন-একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি-নিউইয়র্কের সাধারণ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি মানবাধিকারকর্মী স্বীকৃতি বড়–য়া, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন, চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী শফিউল আজিম, চলচ্চিত্র নির্মাতা শৈবাল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির সদস্য সচিব মো. অলিদ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-সংগঠনের সাবেক সহ-সভাপতি মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান তারেক, জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, এম.এ মান্নান শিমুল, অ্যাডভোকেট মো. সাহাব উদ্দিন, রুবেল চৌধুরী, রাজীব চৌধুরী রাজু, সুচিত্রা গুহ টুম্পা, কানিজ ফাতেমা লিমা, অথৈ মজুমদার অনিন্দ্য, সাজ-সজ্জা উপ কমিটির আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সদস্য সচিব দেবাশীষ আচার্য্য, প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, অর্থ উপ-কমিটির সদস্য সচিব মো. সাজ্জাদ উদ্দিন, বায়েজিদ থানা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব সোহেল প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি