নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার অংশের বিভিন্নস্থানে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ফিশিং বোটে জলদস্যুদের হানা। দস্যুরা এসময় ফিশিং বোটে থাকা জেলেদের মারধর করে মাছ, জাল, বিভিন্ন মালামালসহ সর্বস্ব লুটে নেয়। বিগত বছর দু’একের মধ্যে অনেক জেলে জলদস্যুদের হামলার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার অনেকেই পঙ্গু হয়েছেন। ইদানিং জলদস্যুদের অত্যাচারে অনেক ফিশিং বোটের জেলেরা সাগরে যেতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তার উপর সাগরে দেখা দিয়েছে মাছের আকাল। একদিকে দস্যুদের অত্যাচার, অপরদিকে মাছের আকাল সব মিলিয়ে জেলেদের জীবন অনেকটা বিষিয়ে উঠেছে বলে মাছ আহরণ করতে যাওয়া জেলে পল্লীর অনেকেই জানিয়েছেন। জেলেদের এমন দুর্দশার কথা সর্বত্র জানাজানি হলে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন র্যাব-১৫ এর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার সারারাত অভিযান পরিচালনা করার পর শুক্রবার কক্সবাজার ৬ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় এক প্রেস বিফ্রিংয়ে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার অংশের মহেশখালী চ্যানেল ও বাঁকখালী নদীর মোহনা থেকে ৬ জলদস্যুকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩টি ধারালো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বেশকিছু মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন কুতুবদিয়া লেমশিখালীর মাহমুদ উল্লাহর ছেলে মো. বাদশা, একই ইউনিয়নের মুসালিয়া সিকদার পাড়ার রহিম উল্লাহর ছেলে মো. মারুফুল ইসলাম, একই উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের জুলেখা বিবির পাড়ার মো. ইসমাইলের ছেলে রায়হান উদ্দিন, সাহারুম সিকদার পাড়ার মো. ইউনুসের ছেলে মো. রাফি, পেচারপাড়ার মৃত কবির আহমদের ছেলে এরশাদুল ইসলাম ও নগরীর ইপিজেড থানার নারিকলতলার (সেইলর কলোনি) আবু বক্করের ছেলে মো. আল-আমিন।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জেলেদের আহরিত মাছ, ট্রলারের মালামাল ডাকাতি ও জানমালের ক্ষতি করে আসছিল কতিপয় জলদস্যু সিন্ডিকেট। অসহায় জেলেদের অভিযোগের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জলদস্যুদের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বঙ্গোপসাগরে মহেশখালী এবং বাঁকখালী নদীর মোহনায় দীর্ঘ অভিযান চালিয়ে জেলেদের লুণ্ঠনকৃত প্রায় ৬-৭ হাজার কেজি মাছ, জাল এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩টি ধারালো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মোবাইলসহ ৬ জলদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তাদের দেওয়া তথ্য মতে জলদস্যুতার সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে থেমে নেই জলদস্যুদের হানা
অস্ত্রসহ ৬ জলদস্যু গ্রেফতার



















































