চমেক হাসপাতালে মতবিনিময়ে নওফেল
নিজস্ব প্রতিবেদক
সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর পর নয় মাসের মাথায় সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রামসহ প্রতিটি কারখানায় নিজস্ব ফায়ার ইউনিট গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, ‘জাহাজভাঙা শিল্পের পাশ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ বজায় রাখে স্বার্থে সেখোনে নিজস্ব ফায়ার বডি গড়ে তোলার সময় এসেছে। চট্টগ্রামসহ দেশের প্রতিটি কারখানায় একটি করে ফায়ার ইউনিট গড়ে তোলা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বয় করে এ কাজটি এগিয়ে নিতে হবে।’
গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কনেফারেন্সে কক্ষে বার্ন ইউনিট স্থাপন নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা বিস্ফোরণের পর সরকার কারখানাগুলোতে পর্যাপ্ত ফায়ার সার্ভিসের ব্যবস্থা, নিজস্ব ফায়ার ইউনিট জোরদারসহ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করায় তেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাহাজভাঙা শিল্প, রড ও অক্সিজের প্ল্যান্ট নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। এসব দুর্ঘটনার পর কেবল শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতি এবং সরকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, বিশ্বে আমাদের অর্থনীতিও প্রশ্নের মুখে পড়ে। বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সব প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব ফায়ার বডি স্থাপনে এগিয়ে আসতে হবে। ফলে এসব দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো নাশকতার বিষয় আছে কিনা, কিংবা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোন ত্রুটি আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে এ মুহূর্তে নিহত ও আহতদের পরিবারকে সহায়তা ও সুরক্ষা দেওয়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জেলা প্রশাসন ও শ্রম মস্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মালিকপক্ষের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ অর্থ সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতরা চমেক হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা পাচ্ছেন জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, এখানে বর্তমানে ২৪ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রতি অনুরোধ জানান, সেখানে দলবল নিয়ে রোগীদের ঝুঁকি বাড়াবেন না। এতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা দিতে বেগ পেতে হয়।
এসময় চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে দু’জন আইসিইউতে আছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সবার সুষ্ঠু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল পুরের কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।