নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীতে কোভিড-১৯ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে অস্বচ্ছল নরসুন্দর ও চর্মকারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী দেওয়া ৩৫০ প্যাকেট উপহার সামগ্রী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নগরীর কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এই উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এই সময় ৩৫০ নরসুন্দর ও চর্মকারের মাঝে এসব উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এনডিসি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
প্রতি প্যাকেট উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ছোলা, ২ কেজি আলু, ১ কেজি চিনি, সেমাই ১ প্যাকেট, চিনি ১ কেজি, চিড়া ১ কেজি, চা পাতা ১০০ গ্রাম।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস.এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাম্মৎ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ.স.ম জামশেদ খোন্দকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুদ কামাল, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হাসান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনিক, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী ও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সজীব চক্রবর্তী প্রমুখ।
ত্রাণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এনডিসি বলেন, করোনা প্রতিরোধে লকডাউন চলাকালীন সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া কোন অসহায় মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে তা দেখাশোনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে বলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজের অস্বচ্ছল মানুষের হাতে সরকার প্রদত্ত উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কোন হতদরিদ্র পরিবার যাতে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ না যায় তা কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমজীবী মানুষ একেবারে কর্মহারা হয়ে পড়েছে বা কষ্টে আছে তাদের প্রত্যেককে ত্রাণের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি লকডাউনে কর্মহীন নরসুন্দর, মুচি, চর্মকার ও অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকসহ আরও যারা অতি কষ্টে দিনযাপন করছে তাদের প্রত্যেককে পর্যায়ক্রমে ত্রাণের আওতায় আনা হবে। সরকার ঘোষিত ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চলাকালীন সময় পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাই এই পরিস্থিতিতে কেউ অনাহারে ও কষ্টে থাকবেনা। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা প্রকাশ্যে সাহায্য নিতে সংকোচবোধ করছে বা সাহায্য চেয়ে আমাদের কাছে টেলিফোন ও এসএমএস করছেন তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে মজুদ থাকা ২০ হাজার প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে নগরীতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। মহানগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়ে ও অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা সবাই কাজে ফিরে যাবো। লকডাউনে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক টিম সিপিপি, বেটার ফিউচার বাংলাদেশ, পুর্বাশার আলো, রেড ক্রিসেন্ট, তৃণমূল নাট্যদল, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও নির্বাণ ক্লাব ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করেন।