নিজস্ব প্রতিবেদক »
বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোর মধ্যে প্রথম ‘ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার’ চালু হয়েছে চট্টগ্রামে। এই সেবাদান কেন্দ্রে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া গেলে ওয়ার্ডে কমবে রোগীর চাপ। সেবা নিতে আসা রোগীরা পাবেন গুণগত সেবা।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ‘ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এসব কথা বলেন।
চমেক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে জরুরি বিভাগ স্থানান্তার করে শুরু হয় ৩১ হাজার বর্গফুটের ওয়ান স্টপ ইমারর্জেন্সি কেয়ার ইউনিটের। এক বছরে তৈরি আধুনিক এ স্থাপনায় মিলবে সকল জরুরি সেবা। এ স্থাপনায় ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। শয্যা ও সকল যন্ত্রপাতি চিটাগাং ক্লাব থেকে প্রদান করা হয়েছে।
চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে মিলবে মেডিসিন, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক্স, পেডিয়াট্রিক্স, সার্জারি, আইসিইউ সেবা। এতে আরো থাকছে এক্স-রে, ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, আলট্রাসনোগ্রাফি, প্যাথলজি, পালস অক্সিমিটার এবং রক্তের জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
ওয়ান স্টপ ইমারর্জেন্সি কেয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চমেক হাসপতালে এই ওয়ান স্টপ ইমারর্জেন্সি কেয়ারের জরুরি সেবা চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি সব হাসপাতালের মধ্যে এটি প্রথম। এ ইমারর্জেন্সি কেয়ারে এক ছাদের নিচে মিলবে সকল ধরনের জরুরি সেবা। এতে করে মূল ওয়ার্ডে কমবে রোগীর চাপ। তাছাড়া রোগী নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দৌড়াতে হবে না। এ সেবা চালু করতে চট্টগ্রাম ক্লাব ও বিত্তশালীরা এগিয়ে এসেছেন।’
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, সর্বোপরি দালালের দৌরাত্ম্য ৯০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। অনেক সময় ওষুধ পায় না রোগীরা। সরকার এত টাকা খরচ করে ওষুধ যায় কোথায়? এটা ভাঙতে হবে।
চমেক হাসপাতালের বিদ্যমান জনবল দিয়েই ওএসইসি চালু হলেও এর জন্য আলাদা জনবলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তা সমাধানের দাবি জানান পরিচালক।
চিটাগাং ক্লাবের চেয়ারম্যান নাদের খান বলেন, ওএসইসি’র জন্য জনবল চট্টগ্রামবাসীর দাবি। মেডিক্যালের ইমার্জেন্সি সম্পর্কে অনেকের আস্থা নেই। এখন যে আয়োজন এই বার্তাটা তৃণমূলে গেলে মানুষ আগ্রহী হবে। সম্পদশালীদের সম্পদের উপর সাধারণের হক আছে।
ইমার্জেন্সি সার্ভিসের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ সেবা দিবেন সপ্তাহে সাতদিন, ২৪ ঘণ্টা। রোগী আসার সাথে সাথে ডায়গনসিস দ্রুততম সময়ে হবে। ইনডোরে যে চাপ (দৈনিক তিন হাজার রোগী থাকে) তা কমে এক হাজারে এ নেমে আসবে। রোগীরা পূর্ণ সন্তুষ্টি পাবেন কারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাদের দেখবেন। ওষুধ নিয়ে বাসায় থাকতে পারবেন।
চমেক হাসপালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, চিটাগাং ক্লাবের চেয়ারম্যান নাদের খান, চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, বিএমএ চট্টগ্রাম সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
৩১৭০০ বর্গফুটের ওএসইসি নির্মাণ করা হয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে। পূর্ত কাজ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ। ০৩১৬১৯৭৬১ নম্বর ওএসইসিতে যোগাযোগ করতে পারবেন সেবা প্রার্থীরা।
একই ছাদের নিচে মিলবে জরুরি সেবা
চমেকে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার চালু