নিজস্ব পটিয়া ও আনোয়ারা »
চট্টগ্রামে পৃথক ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ৪ জনের লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের দিঘীরহাট এলাকার রফিক আহমদের পুত্র প্রবাসী মো. সাকিব উদ্দিন (২৪), কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা গ্রামের মোহছেন বাপের বাড়ির হাফেজ আহমদের অন্ত:সত্ত্বা কন্যা রাজিয়া সুলতানা (১৮), আনোয়ারা উপজেলা সদরের ইছামতি এলাকার পরৈকোড়া কৈখাইন গ্রামের মো. ইউসুফের পুত্র আবদুল্লাহ আল মাসুম (১৮) ও একই উপজেলায় পিবিএ সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা (৩৮) এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। শনিবার রাত ২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত পৃথক স্থান থেকে পুলিশ এই চারটি লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পটিয়ার প্রবাসী সাকিব কিছুদিন আগে দেশে ফিরলে তার জন্য বিয়ের আয়োজন করে। তবে তার পছন্দের মেয়ে পরিবার মেনে না নেওয়ায় পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে শনিবার রাতে ঘুমের অতিরিক্ত ওষুধ খান। এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হলে তাকে পটিয়া হাসপাতাল ও পরে চমেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা এলাকার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রাজিয়া প্রতিদিনের মত শনিবার রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার সকাল ৬টার দিকে তাদের জানালা দিয়ে এক প্রতিবেশী রাজিয়ার ঝুলন্ত লাশ লোহার এঙ্গেলে দেখতে পান। পরে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। স্বামী পলাতক রয়েছে। কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ জানিয়েছেন, অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানিয়েছেন, ঘুমের অতিরিক্ত ওষুধ খেয়ে প্রবাসী যুবকের আত্মহত্যা খবর পেয়েছি।
আনোয়ারা : আনোয়ারার পিএবি সড়কের ধারে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। রোববার বেলা এগারোটায় উপজেলার বরুমচড়া রাস্তার মাথা এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। তার আনুমানিক বয়স (৪৫)।বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার। তিনি জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। তবে এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
কিশোরের লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড : এদিকে রাত দুইটায় উপজেলা সদরের ইছামতী এলাকা থেকে আবদুল্লাহ্ আল মাসুম (১৮) নামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। থানা থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৪০০ মিটারের মতো। নিহত মাসুমের গলা, কোমর ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সে আনোয়ারা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইউছুপের পুত্র।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে দশটার সময় উপজেলা সদর থেকে চাতরী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সনজিত দত্ত প্রকাশ সাগর মেম্বারের ছেলে দীপ্ত দত্তের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে ইছামতি এলাকার দিকে যান মাসুম। পরে রাত পৌনে দুইটার সময় পুলিশের ফোন পেয়ে ইছামতি এলাকায় গিয়ে মাসুমের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ ইউছুপ জানান, আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার ২ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে সে মেজ আমি থানায় মামলা করবো।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাম্মেল হক জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রশাসনকে আহবান করব সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য। বিচারের দাবিতে সকালে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা উপজেলা পরিষদে ও থানায় বিক্ষোভ করেন।
বেলা সাড়ে এগারোটার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার, ওসি তদন্ত সাঈদ ওমর।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।