নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনার প্রভাব ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও বাজার মনিটরিং করার সময় নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা না থাকায় জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগরীর কোতোয়ালি, ডবলমুরিং, সদরঘাট ও বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় ৬টি দোকান থেকে ৭ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: উমর ফারুক সুপ্রভাতকে বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও বাজার মনিটরিং করার সময় নগরীর ডবলমুরিং এলাকার একটি দোকান থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সেমাই জব্দ করা হয়। এসময় ওই দোকানিকে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি আরো ৫ দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা দেখাতে না পারায় ৬টি মামলায় ৭ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে নগরীর খুলশি, বায়েজিদ, চান্দগাও ও চকবাজার এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিয়ান পরিচালনা করেছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন। তবে অভিযানে কোন জরিমানা আদায় করা হয়নি।
মেয়াদোত্তীর্ণ সেমাই ও মূল্য তালিকা না থাকায় জরিমানা
৭৬ শতাংশ রোগী বাসায় !
চট্টগ্রামে বুধবার শনাক্ত ৯৫ জন করোনা রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ জন
সালাহ উদ্দিন সায়েম :
চট্টগ্রামে গেল বুধবার নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয় ৯৫ জনের। কিন্তু এদের মধ্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৭ জন। আক্রান্ত বাকি ৮৮ জন হোম আইসোলেশনে (বাড়িতে আলাদা বসবাস) রয়েছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে ১৩ মে পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫১২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৭ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৮৯ জন। তাহলে আক্রান্তের মধ্যে আর বাকি থাকে ৩৯৬ জন। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৪ জন। বাকি ৩০২ জন অর্থাৎ প্রায় ৭৬ শতাংশ রোগী আছেন হোম আইসোলেশনে।
আক্রান্ত হওয়ার পরও হোম আইসোলেশনে কেন?
৩ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার নতুন এই গাইড লাইন প্রণয়ন করে। নতুন এ গাইডলাইন অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শরীর সুস্থ থাকলে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে না। তাকে হোম আইসোলেশনে (বাড়িতে আলাদা বসবাস) থাকতে হবে। তবে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও অন্য শারীরিক জটিল সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে।
চট্টগ্রামে গত ১০ দিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৯ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪০১ জন। ৯ দিন পর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির করোনা চিকিৎসার নতুন গাইড লাইন মেনে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাচ্ছেন। এ কারণে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা কমে গেছে।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর সুপ্রভাতকে বলেন, হাসপাতালে যেহেতু শয্যা সংকট, তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির করোনা চিকিৎসার নতুন গাইড লাইন মেনে চলছি। এখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ থাকলে রোগীদের আমরা বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে বলছি। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি শ্বাসকষ্ট ও অন্য কোনো জটিল সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হলে তার সাথে আমরা কথা বলে বাসায় আইসোলেশনে থাকার মতো পরিবেশ আছে কি-না জানতে চাই। রোগী রাজি হলে আমরা তাকে বাসায় থাকতে বলি। যদি বাসায় আইসোলেশনের পরিবেশ না থাকে তাহলে আমরা তাকে হাসপাতালে চলে আসতে বলি।
চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার জন্য আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১০০টি, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি আর ফিল্ড হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি। তিনটি হাসপাতালে ২০০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৯৪ জন। কিন্তু চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৩৯৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।
করোনায় এসএমই ও কুটির শিল্পে হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
আজিজুল কদির :
দেশের অর্থনীতির বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ও কুটির শিল্প খাত। এই খাতে নিয়োজিত আছে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮শত ৬০ জন দক্ষ অদক্ষ শ্রমিক। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের সব বিপণী বিতানসহ সব ধরনের মেলা আয়োজন বন্ধ থাকায় এই খাতের অবস্থা নাজুক। পাশাপাশি এ বছর পহেলা বৈশাখের সব অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় গোটা এসএমই ও কুটির শিল্প খাত রয়েছে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে।
এই খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত সময় ধরেই এই খাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১০০০ কোটির মতো। আর করোনা ভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটিসহ দোকানপাট বন্ধ রাখার সময়কাল ঈদুল ফিতর পর্যন্ত বাড়লে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। এ পরিস্থিতিতে এই খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে ঘোষিত প্রণোদনা প্রদান খুবই জরুরি।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশ (নাসিব) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মো: নুরুল আজম খান বলেন, বছরে ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা টার্নওভার হয় এসএমই খাত থেকে। এর মধ্যে শুধু পহেলা বৈশাখ আর ঈদুল ফিতরের সময় টার্নওভার হয় এর প্রায় অর্ধেক। সেই হিসাবে এই খাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪ থেকে ৫ শত কোটি টাকা।
নুরুল আজম খান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চলমান অবস্থা যত বেশি দীর্ঘায়িত হবে, এই খাতের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তত বেশি কঠিন হয়ে পড়বে। আগামী তিন মাসে ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান, প্রোডাকশন প্ল্যান ও সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদেরকে সহায়ক জামানতের পরিবর্তে ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং গ্রুপ গ্যারান্টিকে জামানত হিসেবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জামানত ব্যতিরেকে সহজ শর্তে শুধুমাত্র একটি ইউনিফর্ম আবেদনের মাধ্যমে এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চট্টগ্রামের উপ মহাব্যবস্থাপক জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, আমাদের কালুরঘাট, ফৌজদারহাট, পটিয়া, ষোলশহর বিসিক শিল্প এলাকায় মোট ২৩৮টি ছোট বড় শিল্পকারখানা আছে। তারমধ্যে করোনার প্রথমদিকে ৩৫টি কারখানা খোলা থাকলেও বর্তমানে শতকরা ৬৫ ভাগ কারখানা উৎপাদনরত।
করোনায় এই পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিল্প উদোক্তাদের তথ্য অনুসারে বিসিকের কাছে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৭শ ৩৪ কোটি ৮৮ লক্ষ। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে আরো সময় লাগবে। আর তার উপর ভিত্তি করে ঘোষিত সরকারি প্রণোদনাটা দেয়া হবে।
উদোক্তা ও ফ্যাশন ডিজাইনার আইভি হাসান বলেন, করোনার ভয়াবহতা কবে লাঘব হবে তা অজানা। সরকার বিরাজমান এই মহাবিপর্যয়ের মাঝে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে হলে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পখাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এজন্যে এ খাতের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা সহায়তা উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে হবে। সেই সাথে অন্তত যেন চলতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ, সুদবিহীন, ট্যাক্স, ভ্যাটবিহীন সুযোগ করে দেয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।
ক্যারম-লুডুতে অবসর যাপন
রুমন ভট্টাচার্য :
করোনা ভাইরাসে থমকে গেছে প্রায় সবকিছু। ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা কর হয়েছে। দীর্ঘ এই ছুটিতে ঘরবন্দি হওয়া মানুষ পরিবারের সঙ্গে থাকলেও অনেকেই একরকম বিরক্ত হয়ে উঠেছে। সঙ্কটময় এই অবস্থায় বেড়েছে বিভিন্নরকম ঘরোয়া খেলা। ছোট-বড় সকলে কেউ ঘরে লুডু, কেউ ক্যারম, কেউ দাবা খেলে পার করছে অবসর সময়।
পাঁচলাইশ এলাকা বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবি শান্তনু চৌধুরী বলেন, ‘খেলা যে শুধু মাঠেই খেলতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। ঘরোয়া খেলার জন্য বাইরে যেতে হয় না। ফলে ঝুঁকিও নেই। এই বন্ধে বাসায় ক্যারম খেলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতে পারছি, একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে নিয়েই অবসর সময়টা কাটিয়ে দিতে পারছি বেশ মজা করেই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর খেলাধুলার সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলোতে বিক্রি বেড়েছে ঘরোয়া খেলার উপকরণ-যেমন ক্যারম, লুডু, দাবা, বাগাডুলি ইত্যাদির। করোনা ভাইরাসে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে এসব ঘরোয়া খেলার উপকরণের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে।
নগরীর কাজির দেউড়ি মার্কেটের বেশকয়েকটি স্পোর্টসের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বড়-ছোট-মাঝারি বিভিন্ন সাইজের ক্যারম সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ সাইজের ক্যারমের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬ হাজার টাকা। ৫০ সাইজের ৮ হাজার ও ৫৫ সাইজের ১০ হাজার টাকা। এছাড়া ছোটদের ক্যারম ১৫০০-২০০০ হাজার টাকা।
এ সময় ক্যারম কিনতে আসা ডিসি রোডের বাসিন্দা যীশু দাশ বলেন, ‘আগের চেয়ে ক্যারমের দাম অনেক বেড়েছে। ৩ হাজার টাকার ক্যারম এখন ৬ হাজার টাকা। অনেক দোকান ঘুরে ও দর কষাকষি করে শেষপর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ৪৫ সাইজের একটি ক্যারম কিনলাম। কি করব উপায় নেই, লম্বা বন্ধে বাসায় বসে থেকে সময় আর কাটছে না।’
খুচরা লুডু বিক্রেতা সুমন দাশ দাম বাড়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘চাহিদা বাড়ায় লুডুর দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া মার্কেটে সংকট আছে । ছোট-মাঝারি-বড় বিভিন্ন সাইজের লুডু রয়েছে। এখন সর্বনি¤œ ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় লুডু বিক্রয় হচ্ছে। আগে বড়গুলো বিক্রি করতাম ৫০ টাকায় আর এখন দাম বাড়ায় ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’
নগরীর বেটারি গলির বাসিন্দা গৃহিনী সুচিত্রা চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের বন্ধ শুরুর পর থেকে বাসায় একদম সময় কাটছিল না। পাশের দোকান থেকে বড় সাইজের একটি লুডু কিনেছি ৮০ টাকায়, দাম চাওয়া হয়েছিল ১০০ টাকা। স্বামী ও সন্তাদের নিয়ে প্রতিদিন লুডু খেলে অবসর সময় ভালোই পার করছি। ঘরোয়া খেলার সুবিধার হলো বাইরে যেতে হচ্ছে না। সে কারণে একটু নিশ্চিন্ত। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অবসর সময়টা বেশ মজা করে কাটানো যাচ্ছে। খেলায় মেতে উঠলে সময়টা যেমন আনন্দে কাটছে, তেমনি পরিবারের সবার সঙ্গে থাকার পাশাপাশি ছোটরাও বড়দের খুব সান্নিধ্যে থাকতে পারছে।’
কক্সবাজারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২৯ জনে
প্রথম রোহিঙ্গার কোভিড ১৯ শনাক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে দুই রোহিঙ্গাসহ ১৮৬ জনের স্যাম্পল টেস্টের মধ্যে ১২ জনের রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ পাওয়া গেছে। বাকী ১৬৯ জনের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হয়। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৯ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১ জন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ২ জন। এনিয়ে কক্সবাজার জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনা আক্রানত্ম রোগীর সংখ্যা দাড়াঁলো ১২৯ জনে। এদিন এছাড়া ৫ জন পুরাতন করোনা রোগীর ফলোআপ রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ) ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কক্সবাজার মেডিক্যালে ১২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সেখানে বান্দরবানের ৯ জন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার ৭ জন। তাছাড়া এই প্রথমবারের মতো দুজন রোহিঙ্গার করোনা ধরা পড়েছে।
করোনা পজেটিভ হওয়া ১২৯ জনের মধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ৩৫ জন, কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৩৫ জন, পেকুয়া উপজেলায় ২০ জন, মহেশখালী উপজেলায় ১২ জন, উখিয়া উপজেলায় ১৪ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৭ জন, রামু উপজেলায় ৪ জন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ২ জন। গত ৪৪ দিনে কক্সবাজার মেডিক্যালে পিসিআর ল্যাবে মোট ৩ হাজার ৩৬২ জনের স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে।
এ পর্যনত্ম একজন রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি রামু উপজেলার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ার খোপ গ্রামের মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ এর স্ত্রী। এই পর্যন্ত মোট ৩৩ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বেশি দামে পণ্য বিক্রয় ও মূল্য তালিকা না থাকায় জরিমানা আদায়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ও দোকানে বেশি দামে পণ্য বিক্রয় করা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বেলা ১১টা থেকে নগরীর চকবাজার, কোতয়ালী ও ইপিজেড এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ, বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক, নাসরিন আক্তার, সহকারী পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা ও চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান অভিযান পরিচালনা করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (সিএমপি) পুলিশের সহায়তায় চালানো অভিযানে ৮ প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় মোট ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে তিনটি টিসিবি ট্রাকসেল পর্যবেক্ষণ করা হয়।
জনস্বার্থে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা।
করোনায়ও থেমে নেই অপরাধীদের দৌরাত্ম্য
মোহাম্মদ রফিক :
নগরে করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও থেমে নেই অপরাধ কর্মকা-। মরণঘাতি এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পুলিশ মাঠে ব্যস্ত থাকায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
করোনাকালে নগরের ১৬টি থানায় মামলা দায়েরের সংখ্যা কমলেও প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, চাদাবাজি, খুন, ধর্ষণসহ জামায়াত মদদপুষ্ট একটি চক্র দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টাও করেছে। অতি সস্প্রতি বোমা বানানোর সরঞ্জামসহ গ্রেফতার হয়েছেন জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি’র তিন সদস্য।
১২ মে নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে আহত অবস্থায় রকি বড়ুয়াসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ রকির বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদ- পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির জন্য সাঈদীপুত্র ও তারেক মনোয়ারের সঙ্গে বৈঠক করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারের পর রকি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করে র্যাব।
একই দিন নগরের রাজাখালী এলাকা থেকে ৪৭ হাজার ৮৩৫ পিস ইয়াবাসহ দুজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। জব্দ করা ইয়াবার বাজারমূল্য ২ কোটি ১৭ হাজার ৫০০ টাকা।
৮ মে রাত ৯ টার দিকে বায়েজিদ থানার মুরাদনগর এলাকায় পাওনা ৭ হাজার ৪০০ টাকা চাইতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে খুন হন দিদারুল আলম ওরফে রিদোয়ান (৪৯) নামের এক রিকশাচালক। ঘটনার রাতে মামলার আসামি মিন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি, ১টি এলজি ও দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ।
একইদিন (৮ মে) চান্দগাঁও থানাধীন এলাকায় সৎ বাবার হাতে ধর্ষণের শিকার হয় এক কন্যা। আগের দিন নগরে রিকশাচালক সেজে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- মো. মামুন (৩৪), হৃদয় (২০) ও বিমল ওরফে সোহেল (২৪)। এ তিনজনই নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত তিনটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
নগরের ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নব্য জেএমবি’র তিন সদস্যকে গত ৪ মে ডিসি রোডের একটি চারতলা ভবনে থেকে তাদের গ্রেফতার করে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরিজম ইউনিট।
এসময় তাদের হেফাজত থেকে বোমা বানানোর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তারা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে ষোলশহর ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ কর্মকর্তারা।
৩০ এপ্রিল আড্ডা দিতে বাধা দেয়ায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিপাহি মো. হাফিজুর রহমানকে পিটিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িতদেরও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
একইদিন দুর্ধষ শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের নির্দেশে পূর্ব চাঁন্দগাও এলাকায় নুরুল আক্কাস নামে এক প্রবাসীর কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদাবাজি এবং তার বাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকাইয়া আকবর বাহিনীর প্রধান আকবরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পুলিশের তালিকভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী আলী আকবর ও তার সহযোগি পটিয়া উপজেলার কাজীপাড়ার শাজাহানের ছেলে আরিফিন নিশাত, বিবিরহাট এলাকার আলী আক্কাসের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
এর আগে ২৯ এপ্রিল বক্সিরহাট ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে টেরিবাজারের প্রার্থনা বস্ত্রালয়ের গিরিধারী চৌধুরী (৫৮) নামে এক দোকান কর্মচারির মৃত্যু হয়। এ ঘটনা তদন্তে কোতোয়ালী থানায় কর্মরত এএসআই কামরুলের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
২৮ এপ্রিল বাকলিয়া থানা এলাকায় ছিনতাই হওয়া টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
এর আগের দিন ২৭ এপ্রিল বিকেলে আগ্রাবাদ পানওয়ালা পাড়ায় জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাইয়ের হাতে আজগর আলী নামে আরেক ভাই খুন হন। বড়ভাই সালামত আলীর সাথে ঝগড়ার সময় বুকে ইট দিয়ে আঘাত করলে ছোট ভাই আজগর আলী নিহত হন।
২৫ এপ্রিল নগরের কর্ণফুলী থানাধীন এলাকায় সালিশি বৈঠকে আরিফুল ইসলাম দোভাষ নামে এক ব্যক্তি খুন হন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে ২৩ এপ্রিল বাকলিয়া রাহাত্তারপুল বড় কবরস্থান এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে খুন করে স্বামী। এ ঘটনায় স্বামী মুছাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ১৪ এপ্রিল হালিশহর এলাকায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে খুন হন জামাল নামে আরেক ব্যাক্তি। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম সনাক-টিআইবির সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, করোনাকালেও অপরাধীরা থামছে না। মাঠে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পুলিশ ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।
একই মন্তব্য করে নগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান বলেন, করোনা ঠেকাতে মাঠে ব্যস্ত পুলিশ। তবে অপরাধ দমনেও সমানভাবে সক্রিয় আছে পুলিশ। নগরে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। অপরাধের সঙ্গে যুক্তদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চর দখলে ২৬ বসতঘরে আগুন, মহিলা নিহত
চকরিয়ায় দুর্বৃত্তদের তাণ্ডব
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে জেগে উঠা চরের খাস জমি নিতে রাতের আঁধারে একটি গ্রামের ২৬টি বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একশ থেকে দেড় শতাধিক অস্ত্রধারী একটি দুর্বৃত্তদল অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটার দিকে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খিলছাদক ডাঙ্গারচর এলাকার ওই গ্রামে প্রবেশ করে।
পরে চার ঘণ্টা ধরে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে দেড় হাজার মণ ধান, কয়েক’শ মণ মরিচ, আলু ও শিমের বিচি, ৫০ মণ মতো চাল, ৩৫/৪০টির মতো গবাদিপশু, তিনটি মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টেলিভিশন এবং বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ দুই কোটি টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
লুটপাটের পর দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় ওই গ্রামের ২৬টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দেয়। এ সময় আগুনে পুড়ে মারা যায় মনোয়ারা বেগম (৫০) নামে এক নারী।
তিনি ওই এলাকার মোজাহের আহামদের স্ত্রী। এছাড়া দুর্বৃত্তদের এলাপাতাড়ি গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নারী-পুরম্নষসহ ১৫ ব্যক্তি আহত হয়। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চারঘণ্টা ধরে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খিলছাদক ডাঙ্গারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় সর্বস্ব খোয়ানো বাড়ির মালিকরা হলেন কৃষক মোহাম্মদ ইসমাইল, নুরম্নল হোসাইন, আনোয়ার হোসাইন ও মোহাম্মদ ফোরকান, মোজাহের আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, মোজাম্মেল হক ও মো. জাহেদ, নাসির উদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও জমির উদ্দিন, আবু তাহের, শাহ আলম, সাহাব উদ্দিন,সালাহ উদ্দিন ও নেজাম উদ্দিন, আবু ছালেক ও বশির আহমদ, মো. মোসত্মফা, জয়নাল আবেদীন, নবী হোসাইন, আবু হানিফ ও আলী আকবর প্রমুখ।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, কৈয়ারবিলের খিলছাদক অংশে মাতামুহুরী নদী তীরে জেগে ওঠা চরের জায়গার দখল নিতে এই তা-ব চালিয়েছে পার্শ্ববর্তী ইউপির একদল গ্রামবাসী। যারা এই তাণ্ডব চালিয়েছে তাদেরকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
রাঙামাটিতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে ২৪ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি :
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৪ জন হয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে আরো ১০ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. মোস্তফা কামাল।
তিনি জানিয়েছেন আক্রান্তদের মধ্যে লংগদু উপজেলার ২ জন, জুরাছড়ির ৬ জন এবং রাঙামাটি সদর হাসপাতালের একজন নার্স ও একজন আয়া আছেন।
ডা. মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে কর্মরত দুইজন স্বাস্থ্য বিভাগের। বাকি ৮ জন সাধারন মানুষ। এদের মধ্যে ৫ জন নারী ৫ জন পুরুষ আছেন। একজনের বয়স ৭০ বছর। বাকিরা সবাই মধ্যবয়স্ক।
প্রসঙ্গত, এনিয়ে রাঙামাটি জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৪ এ। এর আগে ৬ মে সর্বপ্রথম এই জেলায় করোনা শনাক্ত হয় ৪ জনের। ওই ৪ জনের দ্বিতীয় রিপোর্ট নেগেটিভ আবার পর তৃতীয় রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে ১২ মে ১ জন,১৩ মে ৯ জন এবং আজ ১৪ মে ১০ জন আক্রান্ত হলো।
২১ হাজার মানুষ পাবে অর্থ সহায়তা : মেয়র

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। নগরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৮৪ হাজার পরিবারে ৫টি করে ৪ লাখ ২০ হাজার সাবান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য ২১ হাজার মানুষকে মোবাইল একাউন্টে দেওয়া হবে নগদ অর্থ সহায়তা ।
বুধবার পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের জহুর আহমদ চৌধুরী সিটি করপোরেশন প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউএনডিপি’র অর্থায়নে পরিচালিত এলআইইউপিসি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উপকারভোগীদের মধ্যে জরুরি পুষ্টি খাদ্য সহায়তা ও সাবান বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় নগরের ১ হাজার ৬৭৪ জন গর্ভবতী মা প্রতিমাসে জরুরি পুষ্টি খাদ্য ডিম, তেল এবং ডাল সহায়তা পেয়ে আসছে। এভাবে নগরে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি সেবা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলে করোনা মোকাবেলা ও খাদ্যাভাব অনেকটাই লাঘব হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বে কোভিড-১৯ একটি মহামারি রূপ নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এর দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে আমাদের দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নগরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরতরা। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি ও সচেতন হওয়ার। এই সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পও ভূমিকা রেখে চলেছে।
তিনি আরো বলেন, দরিদ্র এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য ৩৬৪ সিডিসি ও ২১টি ওয়ার্ডের ৩৮৪টি জায়গায় হাত ধোয়ার পয়েন্ট স্থাপন করেছে। কয়েকটি এতিমখানায় ৪৫ হাজার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দরিদ্র এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য লিফলেট, পোস্টার, মাইকিং, ক্যাবল টিভির মাধ্যমেও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প গর্ভবতী মায়েদের জন্য ১ হাজার দিনের জরুরি পুষ্টি খাদ্যা সহায়তা দিয়ে আসছে।
সম্প্রতি ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ান এইড এর সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মাঝে প্রায় ৭০০শ পিপিইসহ আনুষাঙ্গিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মোবারক আলী, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান চৌধুরী, টাউন ফেডারেশনের চেয়ারপারসন কোহিনূর আক্তারসহ এলআইইউপিসি প্রকল্পের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি