সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও এবার থাবা বস লো নোভেল করোনা। প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার তথা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোচ আশিকুর রহমানের শরীরে হদিশ মিলেছে মারণ ভাইরাসের। নিজেই এ খবর জানিয়েছেন তিনি। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার।
গোটা বিশ্বে রীতিমতো তা-ব চালাচ্ছে কভিড-১৯। বিশ্বখ্যাত একাধিক ফুটবলার এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বাদ পড়েনি ক্রিকেট দুনিয়াও। করোনার কামড়ে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির প্রাক্তন ক্রিকেটার জফর সরফরাজ। এই ভাইরাসের কবলে পড়েন স্কটিশ ক্রিকেটার মাজিদ হক এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সোলো এনকোয়েনি। এবার কভিড-১৯-এ আক্রান্ত বাংলাদেশের কোচ। মঙ্গলবারই এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘সোমবারই টেস্টের রিপোর্টটা হাতে পেয়েছি। করোনা পজিটিভ হয়েছে। প্রথমে একেবারেই কিছু টের পাইনি। ভেবেছিলাম টনসিল হয়েছে বলে গলায় ব্যথা। কিন্তু ধীরে ধীরে জ্বর এল। আর তারপর শুরু বুকে ব্যথা। তখনই চিকিৎসকের কাছে যাই। উনি পরীক্ষা করেন।’ মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ এবং এ তালিকাভুক্ত মোট ১৮টি ম্যাচ খেলেছেন আশিকুর রহমান। নিয়েছেন যথাক্রমে ৩৬ ও ২১টি উইকেট। এমনকি, ২০০২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। ছ’বছরের কেরিয়ারে সিনিয়র দলে খেলার সুযোগ না পেলেও কোচ হিসেবে বাংলাদেশে ক্রিকেটে অনেকখানি অবদান রয়েছে এই প্রাক্তন পেসারের। বাংলাদেশ মহিলা দলের সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন বছর তেত্রিশের রহমান। বর্তমানে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে যুক্ত তিনি।
খবর : কলকাতাটোয়েন্টিফোর’র।
বিসিবি ডেভেলপমেন্ট কোচ আশিকুর করোনায় আক্রান্ত
অধ্যয়নরত অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিলো চবি শিক্ষক সমিতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে আজ ১৩ মে দুপুর ১২টায় চবি উপাচার্য দপ্তরে চবিতে অধ্যয়নরত আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, মেধবী এবং প্রতিবন্ধী ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী আড়াই হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
এ সময় চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম উপাচার্যের হাতে বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চবি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মো. তৌহিদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শাহনেওয়াজ মাহমুদ সোহেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুদ্দীন, চবি জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল হোসাইন, প্রক্টর প্রফেসর এসএম মনিরুল হাসান, বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. লায়লা খালেদা, পরিবহন দপ্তরের পরিচালক এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দসহ সংশি¬ষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বলেন, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের অর্থ প্রদানে এগিয়ে এসে চবি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ যে মহানুভবতার পরিচয় দিচ্ছেন তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। এ সকল মানবিক কাজে সবাই এগিয়ে আসলে দেশের যে কোনো দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
শিক্ষার্থীদের অর্থ তাদের একাউন্টে অনলাইনের ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি
এলআইইউপিসি প্রজেক্টের খাদ্য বিতরণ করলেন মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, সম্প্রতি সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ একটি মহামারি রূপ নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশেও এর দাপট বৃদ্ধি করেছ। এমতাবস্থায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে আমাদের দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বিশেষ করে নগরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরতরা। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি ও সচেতন হওয়ার। এই সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপকরণ সরবরাহে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পও ভুমিকা রেখে চলেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্প এই পর্যন্ত ৮৪ হাজার পরিবারকে ৫ টি করে প্রায় ৪ লক্ষ ২৩ হাজার সাবান ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। সেই সাথে হাত ধোয়ার পদ্ধতির বিষয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া দরিদ্র এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য ৩৬৪ সিডিসি ও ২১ টি ওয়ার্ডে ৩৮৪ টি স্থানে হাত ধোয়ার পয়েন্ট স্থাপন করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প গর্ভবতী মায়েদের জন্য ১ হাজার দিনের জরুরি পুষ্টি খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এই কর্মসূচির আওতায় নগরের ১ হাজার ৬৭৪ জন গর্ভবতী মা প্রতিমাসে জরুরি পুষ্টি খাদ্য ডিম, তেল এবং ডাল সহায়তা পেয়ে আসছে।
আজ নগরীর ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডস্থ জহুর আহমদ চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন প্রাথমিক স্কুল মাঠে ইউএনডিপি’র অর্থায়নে পরিচালিত এলআইইউপিসি প্রজেক্টের আওতায় বিভিন্ন উপকারভোগীদের মাঝে জরুরি পুষ্টি খাদ্য ও সহায়তা ও সাবান বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কাউন্সিলর মোবারক আলী, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান চৌধুরী, টাউন ফেডারেশনের চেয়ারপার্সন কোহিনুর আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য ২১ হাজার মানুষকে মোবাইল একাউন্টে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে। এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি খাদ্য সহায়তা মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মেয়র। বিজ্ঞপ্তি
বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ
৩৫ নম্বর বক্সিহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল ১২ মে (মঙ্গলবার) দুপুরে খাতুনগঞ্জ আমিন মার্কেট দলীয় কার্যালয়ের সামনে বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্মা-সাধারণ সম্পাদক আবু মোহাম্মদ ইউছুপের সভাপতিত্বে ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক রায়হানের সঞ্চলনায় ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। উদ্বোধক ছিলেন, সিডিএ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর যুবলীগের সদস্য হাফিজ আনচারী, ৩৫ নম্বর বক্সিহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবসার উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগ যুবলীগের সদস্য নুরুল আনোয়ার, খাতুনগঞ্জ ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াস জামাল, আওয়ামী লীগ নেতা শওকতুল ইসলাম দুলাল, মো. বকতিয়ার প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
হালকাযান পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
করোনা ভাইরাসের কারণে গৃহবন্দি থাকা বাংলাদেশ অটো রিকশা হালকাজান পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। আজ ১৩ মেয় বিকালে নগরীর দেওয়ানহাট মোড়, একে খান মোড়, বাদুরতলা বড় গ্যারেজ ও জিইসি রুটে চলাচলরত এসব হালকা অটো রিকশা পরিবহন শ্রমিকদের এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, মোরশেদ আলম, জহুরুল আলম জসিম, শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ অটো রিকশা হালকাজান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার, নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ সোলাইমান, ইয়াছিন মিয়াজী, মোহাম্মদ মনির প্রমুখ।
এ সময় মেয়র বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে পরিবহন শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় রয়েছেন। পাশাপাশি অনেক পরিবহন মালিকও অভাব অনটনে রয়েছেন। এসব পরিবারগুলোর কথা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। আমাদের সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই কার্যকর ব্যবস্থা। বিগত ৩-৪ দিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ৫ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চট্টগ্রামে আশক্সক্ষাজনকভাবে করোনা শনাক্ত হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি
মো. হোসেন মুরাদ’র মৃত্যুতে খোরশেদ আলম সুজনের শোক
৩৭ নম্বর হালিশহর মুনির নগর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. হোসেন মুরাদ আজ সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন মরহুম মো. হোসেন মুরাদ আওয়ামী লীগের দায়িত্ব থাকাকালীন অবস্থায় সবসময় দলের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতেন। সম্প্রতি স্থগিত হওয়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী ছিলেন মো. হোসেন মুরাদ।
সুজন মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে না পারায় জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় অবস্থিত এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট মারক্স কোম্পানিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখতে পারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালানোর সময় জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার ঠোকতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে এ অভিয়ান চালানো হয়। এসময় ৫ জন ব্যক্তিকে ২শ টাকা করে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক সুপ্রভাতকে বলেন, করোনার প্রভাব ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আগ্রাবাদের মারক্স কোম্পানিকে ৫ হাজার, একই অপরাধে ৫ জন গ্রহককে ২শ টাকা করে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে নগরীর বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা, পাহাড়তলী ও আকবরশাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২টি মামলায় ৬ হাজার, খুলশি ও বায়েজিদ এলাকায় বাজার মনিটরিং করার সময় ৩টি মামলা ২ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
রাঙামাটিতে আরো পাঁচ জনের করোনা শনাক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি
রাঙামাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসকসহ পাঁচ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে মোট ১০ জনের করেনা করোনা পজিটিভ পাওয়া গেলো এ জেলায়।
বুধবার রাতে রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আক্রান্ত নতুন পাঁচজনের গত ৭ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে রাঙামাটি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দুইজন, রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে ভর্তি থাকা ১ জন, বাকি দুইজন বিলাইছড়ি উপজেলার।
সিভিল সার্জন অফিসের করোনা সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, আক্রান্তরা সবাই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন এবং তাদের দ্বিতীয় দফা নমুনা সংগ্রহ করা হবে আবার।
বুধবার রাতে আসা রিপোর্টে আক্রান্ত এই পাঁচজনের মধ্যে একজন রাঙামাটি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, একজন ব্যক্তিগতভাবে নিজের চেম্বারে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। বিলাইছড়িতে আক্রান্ত দুইজনই মা ও ছেলে এবং রাজস্থলীতে আক্রান্ত ব্যক্তি আইসোলেশনে থাকা তিনজনের একজন।
এই প্রথমবারের মতো সিভাসুতে পরীক্ষার পর রিপোর্ট আসলো রাঙামাটিতে এবং একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী পাওয়া গেলো।
এর আগে গত ৬ মে ৪ জনের পজিজটিভ পাওয়ার পর ৭ মে দ্বিতীয় দফা নমুনা পাঠানোর পর ১০ ও ১১ মে তাদের করোনা নেগেটিভ ফলাফল আসে এবং তৃতীয় দফা আবারো নমুনা প্রেরণ করা হয়। ১২ মে আরেকজেনর পজিটিভ আসে। রাঙামাটি জেলায় এ পর্যন্ত ৪৯০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে ৩০৪ জনের।
করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন আওয়ামী লীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবার চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হোসেন মুরাদ (৫০)।
বুধবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুন্সিপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান। মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যাওয়া স্থানীয় এ আওয়ামী লীগ নেতা মৃত্যুকালে এক সন্তান রেখে যান।
মো. হোসেন মুরাদ স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩৭ নম্বর মুনির নগর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে হোসেন মুরাদ ভাইয়ের জ্বর ছিল। গত রোববার করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনেও ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে হতাশা ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘মান্নান জ্বরও কমছে না, পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাইনি।’
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১ জন। এছাড়াও করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড ও বাড়িতে মারা গেছেন আরও ২০ জনের বেশি মানুষ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৭০ জন। বর্তমানে ২৩২ জন রোগী আইসোলেশনে আছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২৩৮ জন।
করোনার হটস্পট : নারায়ণগঞ্জের পরই চট্টগ্রাম
সালাহ উদ্দিন সায়েম :
এক মাস আগে অর্থাৎ গত ১৩ মে চট্টগ্রামে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ জন। গত ৮ দিন আগে ৫ মে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে ১১১ জনে। মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১৭ জনে। ৮ দিন পর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানে ১১ মে পর্যন্ত দেশে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল গাজীপুর। গাজীপুরকে ফেলে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে এসেছে চট্টগ্রাম। প্রথমে রয়েছে করোনার হটস্পট খ্যাত নারায়ণগঞ্জ।
১২ মে পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮৬ জন। গাজীপুরে হয়েছে ৩৪৭ জন। আর ময়মনসিংহে ২৪৬ জন। ঢাকা জেলায় হয়েছে ২৩৮ জন।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলছেন, আর কয়েকদিন পর করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানে চট্টগ্রাম নারায়ণগঞ্জকে ছাড়িয়ে যাবে।
হঠাৎ চট্টগ্রামে হু হু করে কেন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে?
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর মনে করছেন, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সাথে চট্টগ্রামের আন্তঃযোগাযোগের কারণে এখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী এবং কক্সবাজারে অনেক ব্যবসায়ী এসেছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় বিভিন্ন যানবাহন যাতায়াত করছে। এমনকি নগরীতেও বিভিন্ন উপজেলার যানবাহন আসছে। এই আন্তঃযোগাযোগ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পথে-ঘাটে এখন কোনো বাধা নেই। মানুষ যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাচ্ছে। আন্তঃযোগাযোগ বন্ধ না হলে সামনে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হবে।
ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাব প্রধান ডা. শাকিল আহমেদ সুপ্রভাতকে বলেন, সারাবিশ্বে যেভাবে করোনা রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে, আমাদের এখানেও বৃদ্ধি পাওয়ার একটা ট্রেন্ড আছে। তাতে আমাদের সময়টা এসে গেছে। ধারণা করছি, মে মাস পর্যন্ত আমাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমি মার্চ মাসেই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে করোনায় চট্টগ্রাম হবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এখন চট্টগ্রাম মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সামনে চট্টগ্রামের জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
ভেঙ্গে পড়েছে সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাপনা
সীমিত আকারে ও শর্তসাপেক্ষে গার্মেন্টস, দোকানপাট, শপিংমল থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সে ধারাবাহিকতায় দোকানপাট খুলছেও। এতে করে স্বাভাবিক কারণেই রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল বেড়েছে।
নগরীতে গত এক সপ্তাহ ধরেই রাস্তাূূয় লোকজন ও যানবাহনের সংখ্যা তুলনামুলক বেশি দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন না চললেও মানুষ নানাভাবে গন্তব্যে যাচ্ছে।
মাস খানেক আগে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সেনাবাহিনীকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। সামাজিক দূরত্ব না মানায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছিলেন মোবাইল কোর্ট। কিন্তু নগরীতে এখন দেখা যাচ্ছে না জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। এ সুযোগটিকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন মানুষ। তারা ইচ্ছেমতো বের হচ্ছেন। এতে ভেঙ্গে পড়েছে সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাপনা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন সুপ্রভাতকে বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার রিমোর্ট কন্ট্রোল এখন মানুষের হাতে। তাদের জীবন তারাই রক্ষা করবে।
আক্রান্তদের ইতিহাস জানা যাচ্ছে না
গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম দিকে যারা শনাক্ত হয়েছিল চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন তাদের আক্রান্তের ইতিহাস খুঁজে বের করে বলেছিল মৃদু সামাজিক সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও আক্রান্তকারীদের ইতিহাস জানতে পারছে না স্বাস্থ্য প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বললেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে সব আক্রান্তদের ইতিহাস জানার সক্ষমতা আমাদের নেই। আর এখন আমরা সেটা জানার চেষ্টাও করছি না। সামনে হয়তো এমন পরিস্থিতি আসবে যে প্রতিদিন কতজন আক্রান্ত হবে সেটাও হয়তো আমরা বলতে পারবো না।