নিজস্ব প্রতিবেদক »
স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মহত্যার মিথ্যা নাটক সাজিয়েছিল আব্দুস সাত্তার। পরে পুলিশি তদন্তে স্ত্রী হত্যার বিষয় স্বীকার করেন। সেই মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের স্ত্রী হত্যা মামলায় কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার মুছাগরা গ্রামের আব্দুস সাত্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ের আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। তিনি নগরের খুলশী থানাধীন লালখান বাজার ওয়ার্ডের টাংকির পাহাড় এলাকায় স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে ছাদেকের কলোনিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর ওই মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ সাত্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরের বছর ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মোট ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন। আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন আদালত। তবে ঘটনার পর পর গ্রেফতার করা হয় সাত্তারকে। সেই থেকে তিনি জেলহাজতে আছেন।’
আদালত জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট রাতে আব্দুস সাত্তারের বাসা থেকে তার স্ত্রী শাহেদা আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সময় আব্দুস সাত্তার পুলিশকে জানায়, তিনি মেয়ে নিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন। ফিরে এসে দেখেন তার স্ত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
সেই সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাত্তারের আচরণ দেখে তাকে সন্দেহ করে পুলিশ। তাছাড়া তাদের দাম্পত্য কলহের বিষয়ে জানান প্রতিবেশীরা। সাত্তারের স্বীকারোক্তিতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে খুলশী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুর রহমান বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ সময় সাত্তার জানান, ‘সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঘটনার দিন সকালে স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। সেদিন সন্ধ্যায় স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করে সাত্তার। পরে লাশ সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে মেয়ে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়েন। ফিরে এসে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে কান্না করতে থাকেন।