সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে

ঘুমধুমে বিজিবি মহাপরিচালক

পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত

পালিয়ে এলো আরও ৬৩ সীমান্তরক্ষী

নিজস্ব প্রতিনিধি, নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফ
ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্ত রকেট লাঞ্চার ও মর্টার শেলের ভয়ে কিছু লোকবাড়ি-ঘরে ফিরলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি-ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী গতকাল সকালে তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ও সুরক্ষিত রয়েছে। বিজিবি কঠোরভাবে নজর রাখছে। বিজিবির সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধিসহ টহল বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি তৎপর রয়েছে।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আসা ২৬৪ জন মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।
এছাড়া দুজন নারী ও একজন শিশু তাদের সঙ্গে আছে। তাদের মধ্যে ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের ৪ জনকে কক্সবাজার ও ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়াদের বিষয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছে। যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারাও দ্রুত চলে যেতে আগ্রহী।
এ সময় তার সঙ্গে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী তুমব্রু ও ঘুমধুুমে গত রোববার ও সোমবার ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবার ও বুধবার পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল।
আগের ২ দিন তীব্র গোলাগুলিতে তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়। আতঙ্কিত লোকজন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে ও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
পালিয়ে এলো আরও ৬৩ সীমান্তরক্ষী
সেনাসদস্যদের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর চলমান সংঘর্ষে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) আরও ৬৩ সদস্য পালিয়ে এসে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে তারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। পরে তাদের হেফাজতে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ নিয়ে মোট ৩২৭ জন বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পালিয়ে আসে ২৬৪ জন। তাদের মধ্যে বিজিপি, সেনাবাহিনীর সদস্য, কাস্টমস কর্মী ও আহত সাধারণ নাগরিক ছিলেন।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ২৬৪ জনের মধ্যে বিজিপি, সেনাসদস্য, পুলিশসহ অন্যরা রয়েছেন।
বিজিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিজিবির হেফাজতে থাকা ৩২৭ জনের মধ্যে ২৮৫ জন সীমান্তরক্ষী, সেনাসদস্য ২ জন, সিআইডি ৪ জন, লোকাল পুলিশ ৫ জন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের ৯ জন, ইমিগ্রেশন বিভাগের ২০, অসামরিক ২ জন রয়েছে।