নিজস্ব প্রতিবেদক »
মেহেদি হাসান উত্তর কাট্টলী মোস্তফা হাকিম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর একই কলেজে বিএ পড়ছেন। আমবাগান এলাকায় মোবাইলের দোকানে এক ব্যক্তির সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে চাকুরির অফার দেয়া হয়। আর সাত হাজার টাকায় শিক্ষাবোর্ডে অফিস সহকারী পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগপত্রও পেয়ে যায়। সাথে নিজের আরেক বন্ধুকেও নেয়। দুই বন্ধু সেই নিয়োগপত্র অনুযায়ী গতকাল শিক্ষাবোর্ডে যোগদান করতে গেলে জানতে পারে তা ভুয়া নিয়োগপত্র। শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় খুলশি থানায় একটি প্রতারণার মামলাও হয়েছে।
প্রতারণার শিকার দুই যুবকের সাথে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের উপ-সচিব মোহাম্মদ বেলাল হোসেনের সাথে কথা হয়। এসময় তারা জানায়, তানজিব নামে এক ব্যক্তির সাথে তাদের পরিচয় হয় আমবাগান এলাকার মোবাইলে দোকানে। নিজেদের পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা জানানোর পর তানজিব তাদেরকে শিক্ষাবোর্ডে চাকুরি নিয়ে দিতে পারবে বলে জানায়। এজন্য প্রথম দফায় জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরবর্তীতে নিয়োগপত্র দেয়ার পর আরো দুই হাজার করে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রতারণার শিকার মেহেদী হাসান বলেন, আমবাগান এলাকায় কম্পিউটার দোকানে তানজিব নামে একজনের সাথে পরিচয় হয় আমার। আমার পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কথা জেনে তিনি আমাকে শিক্ষাবোর্ডে চাকুরি দিয়ে দেয়ার কথা বলেন। এজন্য তিনি আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে বলেন। পরবর্তীতে নিয়োগপত্র দেয়ার পর আরো দুই হাজার টাকা নেন। একই প্রক্রিয়ায় আমার আরেক বন্ধুকে (রবি দাশ) জানালেও তাকেও নিয়োগপত্র দেয়া হয় এবং সাত হাজার টাকা নেয়া হয়। কিন্তু এখন জানতে পারি এগুলো ভুয়া।
এদিকে নিয়োগপত্রগুলো ইংরেজিতে লেখা এবং নিয়োগপত্রের নিচে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তীর স্বাক্ষরও রয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন,‘ আমার স্বাক্ষরের সাথে এই স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই। এছাড়া চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কোনো নিয়োগপত্র ইংরেজিতে হয় না। এগুলো ভুয়া। এজন্য আমরা তাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করেছি। বাকিটা তদন্ত করে বের হউক।
এতে শিক্ষাবোর্ডের কেউ জড়িত আছেন বলে মনে করছেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,‘ শিক্ষাবোর্ডের কেউ থাকার কথা নয়। যদি থাকতো তাহলে বোর্ডের নিয়োগপত্রের আদলে তা তৈরি হতো। তারপরও বোর্ডের কেউ আছে কিনা তা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।
এদিকে এঘটনায় খুলশি থানায় প্রতারিত দুই যুবকের পক্ষে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে খুলশি থানার সেকেন্ড অফিসার মোহাম্মদ হোসাইন বলেন,‘এঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আসামীদের কোনো ঠিকানা নেই। শুধু কথিত নাম ও মোবাইল নম্বর রয়েছে।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষে নিয়োগেও এ ধরনের প্রতারণা করা হয়েছিল।