ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পটভূমি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈরি আবহাওয়া, তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে এক নজর দেখার জন্য বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে সেদিন ঢল নামে মানুষের।
জনতার কণ্ঠে বজ্র নিনাদে সেদিন ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’; ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল সকালে নগরীর প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে লাখো জনতার সংবর্ধনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা সেদিন বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই কামাল, জামাল, রাসেল সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটনাবহুল এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রেখে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ১৯৮১ সালের ১৭ মে সব হারিয়ে দেশে ফিরে দেশের মানুষকে যে কথা দিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই কথা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, রায়ও কার্যকর হয়েছে। টানা তৃতীয় বারসহ চতুর্থ বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে থেকে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে দেশকে সারা বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতাকে সমুন্নত রাখার লক্ষে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করার আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেতা এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ নুর খান, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন নয়ন, সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার সাইদ ইরান, সদস্য আখতার উদ্দিন মাহমুদ পারভেজ, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীরসহ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি
এ মুহূর্তের সংবাদ