সুপ্রভাত ডেস্ক :
পাশাপাশি সাঁতার কাটতে কাটতে আড্ডা, গল্প, হাত ধরে পাশে থাকার আশ্বাস, একসঙ্গে মেয়েদের দলে উঁকিঝুঁকি দেয়া, এমনকি গোপনে প্রেম নিবেদন! ডলফিন সমাজে এ সব কিছুই হয়। বটলনোজ ডলফিনদের ওপর করা এক গবেষণায় সামুদ্রিক এই প্রাণীর পারস্পরিক সম্পর্কের চিত্র উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘কারেন্ট বায়োলজি’তে।
বটলনোজ ডলফিনদের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, উত্তর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ চীন সাগর ও আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে দেখা মেলে। অনেকটা মানুষের মতোই মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে ডলফিনরা। শব্দের জাল ছুড়ে দিয়ে প্রেম নিবেদন করে, আবার বিপদে পড়লে সংকেতও পাঠায়।
এই ভাষা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়েই বিজ্ঞানীরা দারুণ ব্যাপার খুঁজে পান। ডলফিনরা তো একেবারে সামাজিক জীব! এদের ছোট সংসার আছে, বন্ধুদের দল আছে, আবার তলে তলে হিংসা করা শত্রুও আছে। ডলফিনদের যা মনে হয়েছিল, এর থেকেও অনেক বেশি বুদ্ধিমান এই প্রাণী। এদের প্রতিটি চালচলনের পেছনেই কোনো না কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।
২০১৩ সাল থেকে ডলফিনের শিস নিয়ে গভীর গবেষণায় মগ্ন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার জীববিজ্ঞানী ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এক্সপ্লোরার ডক্টর স্টিফানি কিং। তিনি বলেছেন, এই শিসের নানা রকম মানে আছে। প্রথমে মনে হয়েছিল শুধু বার্তা পাঠাতেই এক রকম আওয়াজ করে ডলফিনরা। এখন দেখা যাচ্ছে, এই শিসটাই হলো তাদের কথা বলার মাধ্যম। এর নানা কম্পাঙ্ক আছে, তীব্রতা আছে। যেমন—মানুষ কথা বলার সময় কখনো আস্তে, আবার কখনো জোরে বা একটানা কথা বলে, বটলনোজরাও ঠিক তেমনই করে।
অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছোট ছোট দল তৈরি করে পুরুষ ডলফিনরা। শিস্ দিয়ে ডেকেই বন্ধুত্ব পাতায়। শুধু মুখের কথা নয়, একে অন্যের হাত ধরে পাশে থাকার আশ্বাসও দেয়। বন্ধুত্বের শুরুতে হাত ধরে, থুড়ি একে অন্যের ফ্লিপার বা পাখনা পাশাপাশি বিছিয়ে সাঁতারও কাটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমনও দেখা গেছে এই বন্ধুত্ব এক-আধ দিনের নয়, মৃত্যু অবধি বয়ে নিয়ে গেছে ডলফিনরা। কোনো কোনো দল আবার একে অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়েও পড়ছে। এমনই শক্তপোক্ত সম্পর্কের বাঁধন তৈরি করতে পারে বটলনোজ ডলফিনরা। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি