নিজস্ব প্রতিবেদক »
এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছে দশ বছরের শিশু রুবেল। জ্বর না কমায় তিনদিন আগে ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
রুবেলের মতো আরও অনেক শিশু ভর্তি আছে এখানে। কোনো শয্যা খালি নেই। অনেক শিশুর শেষ পর্যন্ত ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের দক্ষিণ পাশের লবিতে। যেখানে শয্যা আছে ৬৪টি। শিশু রোগী ভর্তি আছে ১৬৩ জন।
চমেকের শিশু ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে, ৯ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা অর্ধেকের চেয়ে বেশি। হেমাটোলজি, নেফ্রোলজি ইউনিটগুলোতেও রোগীর সংখ্যা কম নয়। অন্তর্বিভাগ ছাড়া বহির্বিভাগেও নানা সমস্যা নিয়ে রোগী আসছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। নগরীর অপর একটি প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালেও রোগী বেড়েছে কয়েকগুণ। এই হাসপাতালে শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে ২৫০ শয্যা রয়েছে। সবগুলো শয্যায় গতকাল রোগী ভর্তি ছিল।
গতকাল দুপুরে চমেকের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে ঝুলানো রোগীর পরিসংখ্যান তালিকায় দেখা গেছে, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৬৪ কিন্তু রোগী ভর্তি আছে ১৬৩ জন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৩৫ এর বিপরীতে ভর্তিকৃত রোগী ৭০ জন। তবে শিশু হেমাটোলজি ও শিশু নেফ্রোলজি ইউনিটে রোগীর সংখ্যা কম। হেমাটোলজি ইউনিটে ১১টি শয্যা থাকলেও রোগী ছিল ৭ জন অন্যদিকে নেফ্রোলজি ইউনিটে ১৪টি শয্যা থাকলেও ৪টি খালি ছিল। শিশু রোগীদের চিকিৎসাসেবার আরেকটি ওয়ার্ড ৩২ নম্বর। এই ওয়ার্ডে ১০০টি শয্যা থাকলেও রোগীর ছিল আরও বেশি।
চিকিৎসক ও নার্সদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ‘নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিস, অ্যাজমা, জ্বর আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও প্রতিদিন গড়ে ২০০ উপরে শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গুরুতর হলে ভর্তিও জন্য পাঠানো হচ্ছে শিশু ওয়ার্ডে।
চমেকে ভর্তি এক শিশুর মা জেসমিন বেগম বলেন, ‘দু-তিন ধরে সর্দিকাশি ছিল। জ্বর ছিল ৫ দিন ধরে। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এখানে ভর্তি করিয়েছি। গত দুই দিন ধরে মেডিক্যালেই আছি।’
চমেক শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে মোট শয্যা আছে ১০২টি। গত ১০/১৫ দিন ধরে প্রতিদিন রোগ ভর্তি হচ্ছে ৩৫০ জনের উপরে। ২৫ জানুয়ারি রোগী ভর্তি রয়েছে ৩৬৫ জন। ২৪ জানুয়ারি ছিল ৩৫৬ জন। ১৫ জানুয়ারি রোগী ছিল ৩৮৪ জন। অর্ধেকের চেয়ে বেশি শিশু রোগী এখন ভর্তি হচ্ছে। জরুরি বিভাগে সকালে চিকিৎসা দিয়ে এসেছি ৩৭ জন শিশুকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে ব্রঙ্কিউলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে।’