নিজস্ব প্রতিবেদক »
গতকাল উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের সময় কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। অনলাইনে ফলাফল দেখা ও করোনা সংক্রমণ রোধে কলেজ আঙ্গিনায় উপস্থিত ছিলো স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী।
গতকাল রোববার দুপুরে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২৬৭টি কলেজের ১ লাখ ১ হাজার ১০২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৯ হাজার ৬২ জন। এবার পাশ এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে।
যদিও কলেজগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করা শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিল খুবই কম। তবে জিপিএ ৫ পেয়ে শীর্ষস্থানে থাকা সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় কলেজ আঙ্গিনার শূন্যতা পুরণ হয়েছে। ফলাফল দেখতে আসা শিক্ষার্থীরা আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে। এ সময় এক শিক্ষার্থী সাইরা বলেন, ‘প্রচুর মানসিক চাপ নিয়ে পড়ালেখা করেছি। আশানুরূপ ফলাফল পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে আমাদের কলেজ প্রথম স্থান অধিকার করায় আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। অনলাইনে ফলাফল দেখতে পারতাম। কিন্তু এখানে না আসলে বন্ধুদের সাথে আনন্দ মুহূর্তগুলো মিস হয়ে যেত।’
সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের ছিল বাঁধভাঙ্গা আনন্দ। শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণে সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভগি করে নিচ্ছে। এ সময় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে নূকিয়াহ্ রামিশা বলেন, ‘সকল সাব্জেক্টে ৯৫ প্লাস মার্কস পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। বিশেষ করে সহপাঠীদের কাছে পেয়ে খুবই খুশি। এমন একটি দিনে তাদের কাছে পেয়ে সকল অপূর্ণতা পূর্ণতায় রূপ নিয়েছে। আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী অভিষেক বড়ুয়া বলেন, ‘যদিও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী সময়ে কলেজে খুবই কম আসা হয়েছে। আজ বন্ধুদের কাছে পেয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ার আনন্দ আরো বেড়ে গেছে।’
জিপিএ প্রাপ্তিতে সেরা দশ কলেজ
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের আওতাধীন কলেজগুলোর মধ্যে জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে র্শীষস্থান অধিকার করেছে সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ। এ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১ হাজার ৭১৪ জন শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ২৮৫ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ০৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৪১ জন। পাশের হার ৯৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যান্য বছরের শতভাগ পাস এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্তির দিক থেকে র্শীষস্থানে থাকা চট্টগ্রাম কলেজ এবার তৃতীয় অবস্থানে। ১ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শতভাগ পাস নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯২৮ জন শিক্ষার্থী।
চতুর্থ স্থানে যোগ হয়েছে হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ। ১ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮১১ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। ১ হাজার ৩৩৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮০৭ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে ১ হাজার ৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭১৬ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।
সরকারি কর্মাস কলেজ জিপিএ ৫ প্রাপ্তির দিক থেকে সপ্তম অবস্থানে। ৮০৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে ১ হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৯৯ জন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১ হাজার ১০৮ জন থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৭২ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দশম অবস্থানে রয়েছে বাকলিয়া সরকারি কলেজ। ১ হাজার ৬৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪১৬ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।