লেখক-পাঠকের মিলনমেলা

হুমাইরা তাজরিন »
গতকালের বইমেলা লেখক-পাঠকের মিলনমেলায় পরিণত হয়। ছুটির দিন থাকায় পাঠক সমাগমে কানায়-কানায় পূর্ণ ছিল মেলা প্রাঙ্গণ।
মেলায় লেখক আনিসুল হককে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তাহমিনা সুলতানা নামের তাঁর এক পাঠক। অটোগ্রাফ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আনিসুল হক স্যারের সাথে দেখা করার জন্য আমি অপেক্ষায় ছিলাম। চট্টগ্রাম থাকার কারণে কখনও দেখা করার সুযোগ পাইনি। ওনার লেখা ‘মা’ উপন্যাসটা আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি কয়েকবার পড়েছি। ওনাকে সামনে দেখতে পেয়েছি, এজন্য বেশ আনন্দ হচ্ছে।
কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক সুপ্রভাতকে বলেন, কিছু পাওয়ার জন্য লিখবেন না, দেওয়ার জন্য লিখবেন। অনেকেই ছবি আঁকে, সবাই শিল্পী হন না। আমি যে চাকরি করতাম, সেটা ছেড়ে দিয়েছি কেবল লেখালিখি করবো বলে। লেখালেখির জন্য আমি আমার জীবনটা বাজি রেখেছি বলা যায়। এখন যখন পাঠকের ভালোবাসা পাই, তখন ভালো লাগে। ‘মা’ বইটা বাংলাদেশে বেশি বিক্রিত বইগুলোর একটি। একজন লেখকের জন্য এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে? নতুন লেখকদের উদ্দেশে বলবো, লেখাটা চালিয়ে যেতে হবে। চর্চার মাধ্যমেই লেখা ভালো লেখা হয়ে ওঠে।
গতকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দিত লেখকদের অনেকেই ছিলেন। তাঁদের সাথে কথা বলতে, তাঁদের লেখা বইতে অটোগ্রাফ নিতে কিংবা মুঠোফোনে তাঁদের সঙ্গের স্মৃতিটা ক্যামেরাবন্দি করতে উৎসুক পাঠকেরা ভিড় করেছেন। পাঠকের এই আন্তরিকতাকে সাদরে গ্রহণ করছেন ব্যস্ত লেখকেরা। প্রিয় লেখককে প্রিয় লেখা পাঠের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ। লেখকেরাও আপ্লুত ছিলেন পাঠকের সাড়া পেয়ে। প্রায় প্রতিটি প্রকাশনীর স্টলেই লেখকেরা পাঠকদের সাথে মতবিনিময়ের এই সময়টি উপভোগ করেছেন।
অন্যান্য দিনের ত্লুনায় গতকাল স্টলগুলোতে বিক্রিও বেড়েছে। এ কারণে সাপ্তাহিক ছুটির এদিনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বিক্রেতারাও।
গতকালের লেখক সম্মিলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। আলোচক ছিলেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও লেখক জয়নুল টিটো। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যকার অভীক ওসমান। আজ পবিত্র শবেবরাত হওয়ায় কোনো অনুষ্ঠান রাখা হয়নি।
গতকালের বইমেলায় কয়েকটি নতুন বই আসে। এসবের মধ্যে ছিল কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত প্রাবন্ধিক সনৎকুমার সাহার ‘অর্থনীতির ন্যায় অন্যায়’, আনিসুল হক-এর কিশোরগল্প ‘অমাবস্যার রাতে কে এসেছিল’, আপন আলো প্রকাশনী থেকে শেখ মকবুল ইসলাম রচিত ‘তঞ্চঙ্গ্যা ফোকলোরোগ্রাফি’, বনানী বাবলি রচিত ‘শান্তিবাহিনীর সাথে কয়দিন এবং কিছু ভালোবাসার গল্প’।