রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ থেকে প্রতারিত ও বিতাড়িত হয়েছে। তারা রাষ্ট্রহীন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশ সরকার তাদের গ্রহণ করে মৃত্যু থেকে বাঁচিয়েছে, এটা বিশাল ব্যাপার। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এসেছে। ১৯৯১-৯২ সালে অনেকে এসেছে। তবে সবচেয়ে বেশি এসেছে ২০১৭ সালে। মিয়ানমার যত অত্যাচার করেছে, তত বেশি রোহিঙ্গা এ দেশে এসেছে।
সুপ্রভাতের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে ক্যাম্পে ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। রোহিঙ্গরা এ কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘গো হোম’।
মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার দাবিতে সমাবেশ করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা। গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল দশটার দিকে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ‘গো হোম’ প্রচারের পক্ষে সমাবেশ করেন। উখিয়া-টেকনাফের ১৩টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে চারটি দাবি উত্থাপন করেন রোহিঙ্গারা। দাবিগুলো হলো-রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং নাগরিকত্ব দিতে হবে, রাখাইন রাজ্যে ফেলে আসা জন্ম ভিটাতে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে, স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ দিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের লুণ্ঠিত সম্পদ ও জায়গা জমি ফেরত দিতে হবে।
রোহিঙ্গারা আর শরণার্থী জীবন চান না। সামনের দিনগুলোতে তারা তাদের জন্মভূমি আরাকানে (রাখাইন) জীবনযাপন করতে চান। বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের রোহিঙ্গাদের হয়ে সুপ্রভাতকে এ কথা বলেন।
বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান অনেক বছর হয়ে গেল। এখন তাদের নিজেদেরও দায়িত্ব নিতে হবে যে কীভাবে তারা তাদের দেশে ফিরে যাবে। আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছি। তাদেরও চিন্তা করতে হবে, তারা কীভাবে ফিরে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র এটাকে গণহত্যা বলেছে। এখন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চাপ দিতে হবে যেন রোহিঙ্গারা দ্রুত ফিরে যায়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় দেশ হিসেবে আমরা প্রশংসা পাচ্ছি। সংকটে থাকলেও আমরা তাদের বিষয়ে দায়িত্ব পালন করছি। এখন কীভাবে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়, সেটা খুবই গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।
রোহিঙ্গাদের ‘গো হোম’
বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে