রোগীদের বাঁচাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা সুজনের

আইসিইউ-সিসিইউর ফাঁদ

আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিও ও লাইফ সাপোর্টের ফাঁদ থেকে রোগীদের বাঁচাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাইভেট হাসপাতালের অযৌক্তিক উল্লিখিত ফাঁদ বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এ সময় চসিকের সাবেক প্রশাসক সুজন বলেন, নগরীতে অবস্থিত প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি জনগণের চিকিৎসা সেবায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিক রোগীর অসুস্থতাকে পুঁজি করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তাদের কাছে সেবার চেয়ে ব্যবসাটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবতার মহান ব্রত নিয়ে তারা এ পেশায় আসলেও রোগীদের জিম্মি করে নিজেদের পকেট ভারী করাটাই এখন তাদের আসল উদ্দেশ্য।

দিনের পর দিন এসব ব্যবসা করতে গিয়ে তারা রোগীর জীবন এবং আত্মীয়-স্বজনকে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। অকারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী ভর্তি হলেই তাকে অযথা আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিও এমনকি লাইফ সাপোর্টে ভর্তি করে দেওয়া হয়। অথচ একজন সাধারণ রোগী কিংবা তার আত্মীয়-স্বজন জানে না রোগীর এ সেবার প্রয়োজন আছে কিনা? অনেক সময় রোগীর অবস্থা খারাপ বলে তার স্বজনদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে লাইফ সাপোর্টে ভর্তি করানো হচ্ছে। পরবর্তীতে রোগীর ছাড়পত্রের সময় তাকে বিশাল অংকের একটি বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনদের ভিটে মাটি বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। রোগীকে এসব সেবা প্রদানের পূর্বে তার আর্থিক সক্ষমতাকে বিবেচনা করা হচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের আবেগকে পুঁজি করে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো সম্পূর্ণরূপে এ ধরনের অনৈতিক ব্যবসা করছে।

নগরীর ওআর নিজাম রোড এলাকার একটি হাসপাতাল এক্ষেত্রে অগ্রগামী বলে বারবার রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে আসছেন। যখন কোন রোগীর স্বাভাবিক সিস্টেমগুলো একদমই কাজ করে না, তখনই কেবল তাকে আইসিইউতে নিতে হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে রোগীর অবস্থা একটু খারাপ হলেই তাকে আইসিইউ, সিসিইউ কিংবা এইচডিওতে নেওয়া হচ্ছে এবং সেখানে দিনের পর দিন রেখে অযৌক্তিক বিল আদায় করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় এসব প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে সেবার মূল্য প্রকাশ্য স্থানে প্রদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে আসলেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে অবশ্যই সেবার মূল্য প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে হবে, যাতে রোগী কিংবা রোগীর স্বজনরা রোগী ভর্তি করানোর আগে জানতে পারে কোন সেবার মূল্য কতো। এছাড়া ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায়ও রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি সন্তান সম্ভাবা নারীদেরকেও অহেতুক সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি এসব প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর আচরণের পরিবর্তন আনার অনুরোধ জানান। নচেৎ এসব হাসপাতালের নাম প্রকাশ্যে ঘোষণাসহ জনগণকে সাথে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করা হবে।

চট্টগ্রামের বিপুলসংখ্যক জনগণের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে এসব প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। বিজ্ঞপ্তি