মোবাইলে অনাসক্ত রাফসান হলেন দেশসেরা

মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদিন কি পড়লাম, কি শিখলাম তা নিয়ে যেত আমার দিন। পড়াশুনার বাইরে অন্য কিছুতে তেমন আগ্রহ ছিলো না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল ফোনে আমি আসক্ত ছিলাম না। এইচএসসি পরীক্ষা শেষে কোচিং সেন্টারের কিছু তথ্য আদান প্রদানের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছি। যখনই কোচিং শুরু হয় তা আবার মাকে জমা দিই। তবে প্রয়োজন হলে চেয়ে নিতাম। এভাবেই নিজের সফলতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন মেডিক্যাল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া রাফসান জামান।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
ফলাফল নিয়ে রাফসান আরও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার দিন নার্ভাস ছিলাম। যখন প্রশ্ন হাতে পেলাম তখন আত্মবিশ্বাস চলে আসে। কারণ প্রায় সবগুলোই আমার কমন পড়েছে। তাই দ্রুত তা লিখে ফেলার চেষ্টা করি। লেখা শেষে রিভিশন দিই। পরীক্ষা আমার ভালো হয়েছিলো। তবে আমি প্রথম হবো তা আমি ভাবিনি। ফলাফলে আমার বাবা-মা সবচেয়ে খুশি। তাদের জন্য বেশি ভালো লাগছে।’
জানা গেছে, রাফসানের বাবা একেএম শামসুজ্জামান ২০০৩ সালে চট্টগ্রামে আসেন। বর্তমানে হালিশহরের কে ব্লগে বসবাস করছেন এবং বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে রাফসান ছোট। তার বোন সাদিয়া ইবনাত চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্য বিষয়ে স্নাতক শেষ করেছেন। রাফসান এসএসসি ও এইচএসসি পড়েছেন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে। দুটি পরীক্ষাতে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছেন।
রাফসানের বাবা বলেন, ‘পরীক্ষা শেষে রাফসান বলেছিলো পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। এত ভালো হয়নি। আমরা তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত ছিলাম। পরে রেজাল্ট হাতে পেলাম। দেখলাম আমার ছেলে প্রথম হয়েছে। ভীষণ গর্ববোধ হচ্ছে। সে কঠোর পরিশ্রম করেছে তাই ভালো ফলাফল করেছে। এখন সে নিউরোসায়েন্সে পড়তে চায়। আমরা তাকে বাঁধা দিবনা। তার ইচ্ছেতেই পড়বে।’
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেকে) এমবিবিএস কোর্সে প্রতিবছর ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘চমেকে এমবিবিএস কোর্সে প্রতিবছর ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। এবারো ২৪০ জনকে ভর্তি করানো হবে। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় গতবছর রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও এবার পরীক্ষার্থী কিছুটা কম ছিল। গতবার ১৩ হাজার ৮৯১ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এবার ৭৬৪জন পরীক্ষার্থী কমে মোট ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল ১৩ হাজার ১২৭জন। দুই বছর আগে (২০২০-২১ শিক্ষাবর্র্ষ) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৯০৫ জন। তারও আগের বছর (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) অংশ নেয় ৬ হাজার ২১১ জন।’