নিজস্ব প্রতিবেদক »
মূল ক্যাম্পাসের প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে চারুকলা ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাস। নানা সমস্যায় জর্জরিত এ ক্যাম্পাসে আর থাকতে চান না শিক্ষার্থীরা। তাই তারা ছয় দিন ধরে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছে ২২টি দাবি পূরণের জন্য। চবি কর্তৃপক্ষ এ দাবি পূরণের জন্য মূল ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে বললেও তাতে রাজি নন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা। এ নিয়ে চবি উপচার্য কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠক বর্জন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য তার কার্যালয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থীসহ চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী, শিক্ষক জসিম উদ্দীন, জাহেদ আলী চৌধুরী যুবরাজ, সুফিয়া বেগম ও উত্তম বড়ুয়া অংশগ্রহণ করেন।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তাদের ২২টি দাবি উপস্থাপন করেন। এতে শিক্ষার্থীরা প্রস্তাব করেন এ দাবিগুলো সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। চারুকলার শিক্ষার্থীদের সাথে পুরো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একমত হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা তা মানতে নারাজ।
শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধি জহির রায়হান অভি বলেন, ‘আমাদের আগ্রহের বিষয়টা হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সাথে একমত হলেও চারুকলা প্রশাসন আমাদের সাথে একমত নয়। চারুকলা প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনাগ্রহের কারণ খুঁজে পাই না।’
চারুকলার আরেকজন শিক্ষার্থী সায়েদ কবির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হল, নিরাপদ ভবন, খেলার মাঠ এগুলো থেকে চারুকলার শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে, এগুলোর সমাধান হওয়া জরুরি। তাই আমাদের ২২টি দাবি মানতে হবে অথবা মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। অনথ্যায় আমাদের আন্দোলন চলবে।
প্রসঙ্গত, আন্দেলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি হলো- ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ ক্লাস রুম, ছাত্র-ছাত্রী হল ও ডাইনিং ব্যবস্থা, প্রতিটা ভবনে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, নিজস্ব বাসের ব্যবস্থাকরণ, প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত টয়লেট, ক্লাসের বরাদ্দকৃত আর্ট ম্যাটেরিয়ালের ব্যবস্থাকরণ, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাকরণ, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থাকরণ, অকেজো পড়ে থাকা জেনারেটর চালুকরণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, খেলার মাঠ, শিক্ষার্থীদের জন্য ফটোকপি মেশিন, প্রিন্ট ও স্টেশনারি সামগ্রীর ব্যবস্থাকরণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ (মশা, পানিজমা, ময়লা ইত্যাদি) নির্মূলকরণ, শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক সংকট দূরীকরণ, ছাত্র-ছাত্রী মিলনায়তনের ব্যবস্থাকরণ, সেমিনারের পরিধি বাড়ানোসহ প্রজেক্টর ও পর্যাপ্ত সাউন্ড সিস্টেম নিশ্চিতকরণ, পুরো প্রাঙ্গণের ওয়াইফাই সংযোগ প্রদান, প্রার্থনাগারের ব্যবস্থা করা, নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোকায়ন, শিক্ষার্থীর জন্য লকারের ব্যবস্থা করা, কম্পিউটার ল্যাবে পর্যাপ্ত কম্পিউটার ও প্রজেক্টর বসানো এবং মডেলের সংকট সমাধান করা।