মুন্সীগঞ্জ থেকে কমদামে আলু এনে চড়াদামে বিক্রি

আড়তদারকে লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

মুন্সীগঞ্জ থেকে সরকারের নির্ধারিত দরে কমদামে আলু এনে চড়া দামে বিক্রি করার দায়ে নগরীর পাহাড়তলী বাজারের এক আলু বিক্রির আড়তদারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও পাহাড়তলী বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করে সংস্থাটি। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির জেলা সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার।

জানা যায়, বাজারে পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ ভালো থাকা সত্ত্বেও দুই সপ্তাহ ধরে নগরীর বিভিন্নস্থানে কৃত্রিম সংকট ও বাড়তি খরচ দেখিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন আলু ব্যবসায়ীরা।

এতে সবজি কিনতে গিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়েন ক্রেতারা। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রথম বারের মতো বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) খুচরা পর্যায়ে আলু, ডিম ও পেঁয়াজের দর নির্ধারণ করে দেন সরকার। এতে হিমাগার পর্যায়ে ২৬ থেকে ২৭ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা দর নির্ধারণ করা হলেও খুচরা বাজারে তার কোন প্রভাব পড়েনি। প্রশাসনের বার বার অভিযানের ফলে মুন্সীগঞ্জের হিমাগার মালিকরা দাম কমালেও ঐ কমদামে আলু কিনে এনে নগরীতে বেশি দামে বিক্রি করছে আলু ব্যবসায়ীরা। খোদ ভোক্তা অধিকারের অভিযানেও এর সত্যতা মিলেছে।

গতকাল নগরীর খুচরা বাজারে মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি করা হয়েছে কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।

ভোক্তা অধিকারের জেলা সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার বলেন, মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের প্রতিনিধি সূত্রে জানতে পেয়েছি যে, ঐখানের হিমাগারগুলো থেকে সরকারের হিমাগার নির্ধারিত দর ২৭ টাকা করে আলু কিনেছেন চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। যার মধ্যে পাহাড়তলি বাজারের লাকী স্টোরের মালিক হাবিবুর রহমান ১৭ সেপ্টেম্বর কেজিপ্রতি ২৭ টাকা করে ৫০ কেজি বস্তায় ২৫০ বস্তা আলু এনেছেন। কিন্তু আমরা তদন্ত করে দেখলাম, প্রতিষ্ঠানটি কেজিপ্রতি ৩৯ টাকা দরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি করছে।

তিনি আরও বলেন, আলুর দরের বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য মুন্সীগঞ্জ থেকে আলুর প্রেরকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা হিমাগার রেট ২৭ টাকা দরে আলু ক্রয়ের পর পাহাড়তলী বাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের কাছে ২৫০ বস্তা আলু পাঠিয়েছেন। তবে প্রেরকরা এ প্রতিষ্ঠানকে ৩৯ টাকায় আলু বিক্রয়ের কোন নির্দেশনা দেননি বরং খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের কাছে সরকারের নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করতে বলেছিলেন। কিন্তু পাহাড়তলীর এ ব্যবসায়ী তা না করে উল্টো চড়া দরে আলু বিক্রি করছে। এমনকি আলুর বিক্রয় মূল্য ও মূল্য তালিকাও রাখেননি। যার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিকার জেলা সহকারী পরিচালক আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা অবশিষ্ট ১৫ থেকে ১৬ বস্তা আলু ৩২ টাকা পাইকারি দরে বিক্রয় করা হয়েছে। এছাড়া ডিম ও আলুর আরো দুটি প্রতিষ্ঠানকে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার কারণে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে রেয়াজুদ্দিন বাজারের নির্দিষ্ট কোন ব্যবসায়ীর নিকট আলু প্রেরণ করা হয়েছে তা উল্লেখ না থাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।