কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আসতে শুরু করেছে। তবে এবার মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গরু-মহিষ ব্যবসা নিয়ে দুচিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডরে মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৭৯৩টি গরু-মহিষ এসেছে।
টেকনাফ শুল্ক বিভাগের কাস্টমস সুপার মো আবসার উদ্দিন বলেন, সদ্যসমাপ্ত জুন মাসের ৫ হাজার ২১৩ টি গরু ও ৩ হাজার ৩১২টি মহিষসহ ৮ হাজার ৫২৫টি গবাদি পশু এসেছে। এসবের বিপরীতে ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাশ্ববর্তীদেশ মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মিয়ানমার থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, আবু ছৈয়দ মেম্বার, মো.শরীফ মেম্বার, মোহাম্মদ সোহেল ও আলমগীরের কাছে ৭৮২টি গরু-মহিষ এসেছে। এসব ট্রলার থেকে খালাসের পর করিডরে খোলা জায়গায় রাখা হচ্ছে।
জানা যায়, দেশে মাংসের চাহিদা পূরণ করতে তৎকালিন সরকার ২০০৩ সালে ২৫ মে এই করিডরটি চালু করেন। এটি বৃহত্তর চট্টগ্রামের একমাত্র করিডর। সারাবছর এ করিডর দিয়ে গরু-মহিষ আসলেও এখন আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আসতে শুরু হয়েছে। এ করিডর দিয়ে যেসব পশু আসছে তা দ্রুত হাত বদল বা কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ দিচ্ছেন।
শাহপরীর দ্বীপ করিডরের গরু ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ মেম্বার জানান, এবার করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা নিয়ে দুচিন্তায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আবার আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রচুর পরিমাণের গরু-মহিষ আসার কথা রয়েছে। এবার কোরবানিতে সাড়ে ২০ হাজার পশু আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকলে থাকার পাশাপাশি সাগরও শান্ত থাকতে হবে। কোনো ধরনের বাধা ছাড়া গবাদিপশু আসতে পারলে স্থানীয় লোকজন কম দামে গরু-মহিষ কিনতে পারবে।
করিডর পশু ব্যবসায়ীরা বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ফেলে এ করিডর দিয়ে কোরবানির ঈদের আগেদিন পর্যন্ত গবাদি পশু আনা হবে। শুধুমাত্র ঈদকে সামনের রেখে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের কাছে আগাম লাখ লাখ টাকা দাদন দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফয়সাল হাসান খান জানান, মিয়ানমার থেকে আসা গবাদিপশুগুলো গণনা করার পরে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়। প্রতিটি গরু-মহিষের বিপরীতে ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায়ের পরে পশুগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গবাদি পশুর সঙ্গে যাতে মিয়ানমার থেকে কোনো ধরনের অবৈধ মাদক প্রবেশ করালে জড়িতদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সর্তক রয়েছে বিজিবির সদস্যরা।