পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী
‘আমরা ভূমি বণ্টননামা কার্যকর করবো’
নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে মেলার জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরমধ্যে নগরের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় দু’টির মধ্যে একটি স্থান নির্বাচনে পরিকল্পনার কথা জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মেলার জন্য দুটি এলাকা প্রসঙ্গে ডিসি (জেলা প্রশাসক) সাহেব আমাকে জানিয়েছেন। এরমধ্যে একটি হলো পোর্ট রিং রোডের টার্নিংয়ে। যেখানে ফুলের বাগান করা হয়েছে। ওটা খুব সুন্দর। আরেকটি পতেঙ্গার সী-বিচ এলাকায়। এ দুটি এলাকার যে কোনো একটিতে বিশ্বমানের বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন গড়ে তোলা হবে। এরপর থেকে মেলা হবে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনে।
গতকাল আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আয়োজিত হয় ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সার্টিফিকেট ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চেম্বারের বাণিজ্যিক ক্ষেত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চিটাগং চেম্বার পর্যটন নিয়ে কাজ করতে পারে। চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার দিয়ে ঘুরে বায়জিদ বাইপাস ও আউটার লিংক রোড হয়ে ঘুরে আসলে দারুণ লং ড্রাইভ হয়। এছাড়া ত্রিপুরা, আসাম এলাকাকে সম্পৃক্ত করে পর্যটনের প্যাকেজ তৈরি করা যায়। সমুদ্রকে প্রাধান্য দিয়ে পর্যটন প্যাকেজ করলে ওরা আকৃষ্ট হবে। কারণ ওদের ওখানে সমুদ্র নেই।’
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই মনে করেছিল বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে। কিন্তু বাংলাদেশ তা হয়নি। বাংলাদেশের অবস্থান শ্রীলংকা থেকে অনেক শক্তিশালী। করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ডলার সংকটের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিপর্যয় হলেও আমাদের খাদ্য উৎপাদন ঠিক থাকায় সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। আমি মন্ত্রী থাকাকালে ভূমি আইন ঠিক করে যেতে চাই, যেন সম্পত্তি নিয়ে আর পারিবারিক কলহ সৃষ্টি না হয়। পারিবারিক কলহ নিরসনে আমরা ভূমি বণ্টননামা কার্যকর করতে যাচ্ছি। এছাড়া ল্যান্ড ক্রাইম বিবাদ কমানোর জন্য আমরা আইন প্রণয়নও করতে যাচ্ছি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এম এ লতিফ বলেন, ‘জাপানের সাথে চিটাগং চেম্বার যে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কারিগরি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কোরিয়া, চীন ও তাইওয়ানের মত অনেক দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে জাপান। এখন বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য একটি অন্যতম স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তাই আমাদেরকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম তথা দেশের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে চিটাগং চেম্বার।’ খেলার মাঠে মেলার পরিবর্তে রপ্তানি পণ্য প্রসারের জন্য চট্টগ্রামে পতেঙ্গা সী-বিচ ও বে-টার্মিনাল সংলগ্ন মধ্যবর্তী এলাকায় মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যু বরাদ্দের আহ্বানে ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রশংসা করেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন, স্টল এবং দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে- ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং কে ওয়াই টু টোন লিমিটেড। স্টলের মধ্যে বিদ্যানন্দন প্রকাশনী, ড্রেস লাইন বাংলাদেশ যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে হ্যাপি ডে ও প্রাণ ডেইরি। এছাড়া শ্রেষ্ঠ দেশীয় প্রস্তুতকারী হিসেবে শোয়েব করপোরেশন লিমিটেডকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, আগামী ২২ মার্চ (বুধবার) পর্যন্ত ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা চলবে বলে জানান আয়োজকরা।