সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে রূপরেখা দিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। রাষ্ট্রদূত বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা আরও জোরদার করার ঐতিহাসিক সুযোগ গ্রহণ করতে প্রস্তুত দুই দেশ।
বিস্তৃত ক্ষেত্রে নতুন সহযোগিতা সম্প্রসারণে চীন কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নীল অর্থনীতি, আর্থিক স্থিতিশীলতা, ডিজিটাল ক্ষমতায়ন, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং টেকসই উন্নয়নকে সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করে চীনের রাষ্ট্রদূত নতুন সহযোগিতা সম্প্রসারণে চীন কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা অভিন্ন উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন করব এবং মানবজাতির একটি সম্প্রদায়ের অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে অগ্রসর হব।’
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশ সব সময় তার নিজস্ব জাতীয় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আধুনিকীকরণের পথ অনুসন্ধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন আশা করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নতুন সরকার জনগণকে জাতীয় সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে দ্রুত ও অবিচলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং স্টেট কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠান।
চীনা নেতারা বলেন, গত আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তা বাস্তবায়নে দুই দেশ যৌথ প্রচেষ্টা চালাবে।
চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বকে উৎসাহিত করা, উন্নয়ন কৌশলকে আরও সমন্বিত এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভকে উন্নীত করবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও বাংলাদেশ উভয় দেশই উন্নয়নশীল ও জনবহুল। নিজ নিজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে দেশ দুটি।
চীন একটি সমান ও সুশৃঙ্খল বহুমুখী বিশ্বের আহ্বান জানিয়েছে। একটি বিস্তৃত আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তুলেছে। এছাড়াও কার্যকর সমাধান প্রস্তাব করেছে। যেটিতে মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎসহ একটি সম্প্রদায় গঠনের বাস্তবতা এবং দিকনির্দেশনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বহুমতের বিশ্ব সমান হওয়া উচিত বলে আমরা সমর্থন করি। অর্থাৎ সব দেশের সমতার ওপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে আধিপত্য ও ক্ষমতার রাজনীতির বিরোধিতা করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের একচেটিয়া শাসনের অবসান হতে হবে এবং কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রীকরণকে উৎসাহিত করতে হবে।’
সব দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোর সমাধান করতে হবে এবং বিশ্বের ভবিষ্যৎ ও ভাগ্য সব দেশের হাতে থাকা উচিত। তিনি বলেন, মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা ইতিহাসের সাধারণ ধারা এবং মানুষের প্রত্যাশা তুলে ধরে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিশ্বের ভবিষ্যৎ সব দেশ যৌথভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে, যা আরও বেশি দেশ উপলব্ধি করতে পেরেছে এবং আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তা তৈরি করতে হবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এসব কথা বলেন।
সূত্র : ইউএনবি