বইয়ের খবর, লেখকের খবর, মেলার খবর

Sierra Exif JPEG

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালির প্রাণের বইমেলা। একসময় বাংলা একাডেমি চত্বরে শুরু হলেও এই মেলা দেশের অনেক স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের অনেক দেশে এখন একুশে ফেব্রুয়ারি পালনসহ বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলা লেখক-পাঠকদের মধ্যে এক মেলবন্ধনও তৈরি করে। মেলা নিয়ে, বই নিয়ে সুপ্রভাত কথা বলেছে লেখকদের সঙ্গে। নির্দিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন তারা। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
১। মেলায় কী কী বই বের হচ্ছে?
২। কী বিষয় নিয়ে লিখলেন? (প্রবন্ধ ও উপন্যাসের ক্ষেত্রে)
৩। চট্টগ্রামে প্রকাশনার মান কেমন?
৪। বই বিক্রি কি কমেছে বলে মনে করেন?
৫। একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বই প্রকাশ করা, এটাকে কীভাবে দেখেন?

ওমর কায়সার

১। আমার দুটো বই আসছে বইমেলায়।
একটি কবিতার – হুসেন মিয়ার দ্বীপে।
আরেকটি ছোটদের গল্প।
যেভাবে বাড়িটি ভুতের হল।
২। আমার এবারের কবিতার বইটিতে একটি বিশেষ স্বপ্ন আছে। একটি নতুন আশা। সমুদ্রের বুক থেকে একটি বিশাল ভূখণ্ডের
উত্থান হয়েছে। সেই ভূখণ্ড-অযান্ত্রিক, ওখানে কোনো মুদ্রার প্রচলন নেই। নেই কোনো করের বোঝা। প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত এই অদ্ভুত ভূখণ্ডে নবজন্ম লাভ করে পদ্মা নদীর মাঝির সেই কুবের। যেন এটা হুসেন মিয়ার সেই স্বপ্নের দ্বীপ।
৩। চট্টগ্রামের প্রকাশনা শিল্প দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। বিষয় এবং বইয়ের মান দিন দিন উন্নততর হচ্ছে। একটা পেশাদারিত্বও জন্ম নিচ্ছে। আমি চট্টগ্রামের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে খুব আশাবাদী।
৪। বই বিক্রি কমেছে বলে আমার মনে হয় না। নানা আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে হয়তো কিছুটা স্থবিরতা এসেছে।
৫। আমাদের দেশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে নতুন বই বের করা একটা রীতিতে দাঁড়িয়েছে । সেটা আমাদের ঐতিহ্য। আমার ভালো লাগে বছরের এই উৎসবটি দেখতে। একুশ আমাদের বই লেখার, বই পড়ার, বই কেনার প্রেরণা যোগায়। ফেব্রুয়ারি মূলত আমাদের বই মাস। তবে বই শুধু ফেব্রুয়ারিতে কিনব, শুধু ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করব -এরকম মনোভাব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা দরকার।

শৈবাল চৌধুরী

১) ২০২৫ সালের বইমেলায় আমার একটি বই বের হচ্ছে। বইয়ের নাম, ‘মৃণাল সেন : বিশ্বচলচ্চিত্রের সাহসী অভিযাত্রিক’।
২) প্রবন্ধ। বিযয়: মৃণাল সেনের চলচ্চিত্র ও জীবন।
৩) চট্টগ্রামে প্রকাশনার মান বর্তমানে অনেক উন্নত।
৪) বই বিক্রি অনেক কমে গেছে। এ প্রজন্ম গ্রন্থবিমুখ।
৫) একুশের বইমেলা উপলক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে বই প্রকাশের উদ্যোগটি ইতিবাচক। এটা অন্যান্য দেশেও হয়ে থাকে। তবে মেলার সময় তাড়াহুড়ো না করে আরও কয়েকমাস আগে থেকে প্রকাশনার কাজটি শুরু করে মেলার মাস খানেক আগে বই তৈরি করে রাখলে খুব ভালো। মানও বজায় থাকে।

আকতার হোসাইন

১) নতুন কোনও বই বের হচ্ছে না।
৩) আগের চেয়ে অনেক ভালো। ঢাকার সাথে পাল্লা দেয়ার মতো।
৪) কমেছে। বইয়ের ক্রেতা মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণী। বইয়ের মূল্য এবং তাদের ক্রয়ক্ষমতা, সব মিলিয়ে বইবিক্রি কমে গেছে, সন্দেহ নেই।
৫) সারাবছরই বই প্রকাশ হলে ভালো।

খালেদ হামিদী

১। এবার মেলায় আসছে আমার অনুবাদ বই: ওরহান পামুকের নির্বাচিত গদ্য। প্রকাশক দ্বিমত পাবলিশার্স।
২। এতে রয়েছে কথাসাহিত্য বিষয়ে লেখা পামুকের নয়টি প্রবন্ধের অনুবাদ। আমি তাঁর তুর্কি লেখার ইংলিশ ভার্শন থেকে অনুবাদ করেছি।
৩। চট্টগ্রামে প্রকাশনার মান বলতে, কমোডিটি অথবা প্রোডাকশন হিসেবে কম-বেশি ভালোই। তবে মানসম্পন্ন পাণ্ডুলিপি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রকাশকদের আরও সচেতন হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে হয়।
৪। আন্তর্জালে অনেক বইয়ের পিডিএফ ভার্শন সুলভ হওয়ায় লেখকদেরও কেউ কেউ সুযোগটা নিচ্ছেন। সেই হেতু বিশ^সাহিত্যের বিক্রি কিছুটা কমেছে, বলতে পারি। তবু গ্রন্থমেলায় বছরের অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বই বিক্রি হয়। এটা অনেকটা হুজুগের মতো। তবে বাতিঘর বই-বাজারের অবস্থা পাল্টে দিয়েছে যা খুবই আশাব্যঞ্জক।
৫। ঐ যে হুজুগের কথা বললাম। বই বছর জুড়ে প্রকাশিত হওয়া দরকার। সেই সঙ্গে পাঠকদের মেলাকেন্দ্রিকতার পরিবর্তনও জরুরি। পাশাপাশি বইমেলাও বরাবরের মতোই দর্শক-পাঠকদের সমাগমে থাকা উচিত প্রাণপ্রাচুর্যময়।

জিললুর রহমান

১। কবিতার বই ‘যথানির্দেশ উপুড় হয়ে আছি’।
২। কবিতা, কোভিডকালীন এবং কোভিড-পরবর্তী সময়ে রচিত কবিতা।
৩। মান তো বেশ ভাল।
৪। আমার ধারণা নেই।
৫। প্রকাশকের ধারণা এইসময় বই বের করলে বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।