প্রতিবাদী জয়া আহসান : এ কোন নরক এই পৃথিবীতে!

সুপ্রভাত ডেস্ক :

দেশে সাংবাদিক হেনস্তা আর ফিলিস্তিনে শতাধিক শিশুর মৃত্যু। দুটো বিষয়ে প্রতিবাদী হলেন দুই বাংলার শীর্ষ অভিনেত্রী-প্রযোজক জয়া আহসান। জানালেন নিজের ক্ষোভের কথা। যেমনটা এই বাংলার তারকাদের মধ্যে সচরাচর মেলে না।

বুধবার (১৯ মে) সকালে জয়া প্রকাশ করেছেন তার ভেতরে চলতে থাকা অস্থিরতার কথা। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের রক্তপাত, ধ্বংস হওয়া সভ্যতা আর শিশুদের কান্নায় চোখ ভিজে যাচ্ছে এই অভিনেত্রীর।

তার ভাষায়, ‘ফিলিস্তিনের ছবি দেখছি খবরের কাগজে, টেলিভিশনের পর্দায়। দেখছি আর নরকের অতলে নেমে যাচ্ছি মনে হয়। ভেঙে ঝুরঝুরে হয়ে যাওয়া বাড়িঘর। তার ওপরে ভাসছে পাক খাওয়া আগুন। আর সারিবাঁধা তরতাজা লাশ। অথচ একটু আগেই তারা হাসছিল, খাচ্ছিল, শিশুটি নিচ্ছিল মায়ের আদর।’

বাচ্চাদের অসহায়ত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে জয়া আরও বলেন, ‘যারা বেঁচে আছে, তারা রক্তমাখা। আগুনের লেলিহান শিখার নিচে ছুটোছুটি করছে। নিজের জীবন বাঁচাতে নয়। ধ্বংসস্তূপ ঝাঁঝরা ইট সরিয়ে সরিয়ে তারা বের করে আনছে চাপা পড়ে থাকা শিশুদের। ওই কচি বাচ্চাগুলো ডুবে ছিল আলো-বাতাসহীন বিভীষিকার তলায়!’

‘একটি শিশুকে উদ্ধার করা হলো, ওর পুরো পরিবার পাঁচ মিনিট আগেও মমতায় ঘিরে রেখেছিল ওকে। পৃথিবীতে এখন সে একেবারে একা। ছোট্ট একটা খুকি। এখনই তার পরিবার নেই, দেশ তো ছিলই না’- যোগ করলেন অভিনেত্রী। তার প্রশ্ন, ‘খবরের কাগজে পড়লাম, গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলের নির্মম হামলায় ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এর চার ভাগের এক ভাগেরও বেশি নাকি শিশু। এ কোন নরক এই পৃথিবীতে? তাদের অসহায়ত্ব আর হাহাকার শুনে কণ্ঠ বুজে আসে।’ জয়া আহসান আহ্বানের প্রত্যাশা, ‘এই যুদ্ধ থামুক। শিশুরা খেলা করুক রোদেলা মাঠে, খেজুর গাছের নিচে। নিজের দেশে দেশছাড়া এই মানুষগুলো নিজেদের এক চিলতে ঘরে ফিরুক। এক জীবনে কি এটা খুব বড় প্রত্যাশা?’

শুধু ফিলিস্তিন ইস্যুতেই নয়, দেশে সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়েও সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়েছেন জয়া আহসান। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা, মামলা এবং জেলে পাঠানোর চলমান ইস্যুকে লক্ষ করে জয়া গতকালই (১৮ মে) বলেন, ‘রোজিনা সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন, সিঁধ কাটতে নয়। দেখতে পেলাম হেনস্তার শিকার হয়ে তিনি মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন। এই আমাদের আচরণ! এই আমাদের সভ্যতা!’

 

আরও বলেন, ‘রোজিনার গলার ওপর চেপে বসা আঙুলগুলো গভীর অর্থময় এক প্রতীকের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে, আঙুলগুলো কোনও ব্যক্তির গলায় নয়, বরং বাংলাদেশের বাকস্বাধীনতার কণ্ঠনালিতে চেপে বসেছে।’

তার প্রশ্ন ও দাবি, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেই এমন অশুভ একটি ঘটনা আমাদের দেখতে হলো? রোজিনাকে তার পরিবারের কাছে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’