শ্রমিক দলের সভায় নজরুল ইসলাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোন মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়, তাহলে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে, ভোটের মাঠে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হবে। তার আগে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা। নিরপেক্ষ সরকার আসলেই জনগণের মূল্যায়ন হবে, ভোটের অধিকার ফিরে আসবে।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে নুর আহমদ সড়কের নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি যেন আদায় করতে না পারি তার জন্য ‘মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলায়’ আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ জানে, বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার কাছে তাদের অন্যায় অত্যাচার টিকবে না। তিনি এত জনপ্রিয় নেত্রী, দেশের যে কোনো স্থান থেকে যখনই নির্বাচন করেছিলেন জয়ী হয়েছেন। খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে জোর করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতো না। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশে আসতে দিচ্ছে না। কারণ জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তাকে তারা ভয় পায়’।
তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, শোষণমুক্ত, গণতন্ত্র ও শান্তির জন্য। আজকে স্বাধীনতার যে আকাক্সক্ষা ছিল তা সম্পূর্ণ ভূলুণ্ঠিত। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি, ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সাথে আপোষ না করে আমরা বার বার গণতন্ত্র রক্ষা করেছি। এই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে আবারো আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো এবং করতে হবে। তাই শ্রমিকদলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপিকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নাই’।
আলোচনায় সভার প্রধান বক্তা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পায়ের নীচে মাটি নেই। তারা এখন আবোল-তাবোল বকছে। তালবাহানা বন্ধ করে অনতিলম্বে আগামী নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার দাবি মেনে নিতে হবে। সরকারের সাথে বিএনপির আর কোনো আলোচনা হবে না, আলোচনা হবে নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে। তার আগে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সারাদেশে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তারপর নির্বাচনে যাবে কি যাবে না সে বিষয়ে আলোচনা হবে। যদি আবারো পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা করা হয় তাহলে তার দাতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য জনগণ প্রস্তুত হয়েছে’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আজ সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরস্ত্র ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। চট্টগ্রামে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের শান্তিপূর্ণ কর্মীসভায় হামলা করছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা। আমাদের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠান শেষে শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার প্রাক্কালে পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় মাহবুবের রহমান শামীম, ডা. শাহাদাতসহ মহিলা দলের অনেক নেতাকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা বলতে চাই, এসব বন্ধ করতে হবে। প্রশাসনকে এসব বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি আর হামলা চালানো হয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে’।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নূর উল্লাহ বাহারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল, উপদেষ্টা শামছুল আলম, সহ সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, জেলা ও মহানগর অঞ্চল নেতৃবৃন্দ শাহনেওয়াজ চৌধুরী মিনু, শফিকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, আবদুল মোতালেব চৌধুরী, ডা. শফিকুল ইসলাম তরুন, আবু বক্কর সিদ্দিক, আবু জাফর, কুতুব উদ্দিন, মমতাজ মিয়া, মুজিবুর রহমান, আবদুল মান্নান, ইব্রাহিম ফরাজী, আবদুল বাতেন, জসিম মিয়া, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সালে আহম্মদ, অপু সিংহ, নর্গিস আলম, লকি আক্তার, কামরুন নাহার প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি