নামফলকে নাম : কোনো নীতিমালা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের

বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। যদিও এটি উদ্বোধন করা হয়েছিল দুবছর আগে। তবে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার প্রথম দিনে প্রবেশপথের দেয়ালে থাকা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের একটি ম্যুরালের নামফলক থেকে প্রথম প্রাধ্যক্ষের নাম মুছে দেওয়ার ঘটনা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ম্যুরালটি নির্মাণের সময় তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ প্রকাশ দাশ গুপ্ত। তাঁর নাম কেন মুছে ফেলা হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তরে বর্তমান প্রাধ্যক্ষ উদিতি দাশ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের হলে ওঠা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পালি বিভাগের শিক্ষক জিনবোধি ভিক্ষু ছিলেন। তিনিই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ হলের অনুমোদন এনেছিলেন। আলোচনা সভায় এসে তিনি ম্যুরালে প্রথম প্রাধ্যক্ষ প্রকাশ দাশ গুপ্তের নাম দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ কারণে পরিস্থিতি সামলাতে নামফলক থেকে প্রকাশ দাশ গুপ্তের নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দুটি হলের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি টাকা অর্থায়ন করার ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছেন। হলের নকশা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তাঁর অবদান ছিল। কিন্তু তাঁর নাম কোথাও উল্লেখ নেই। এ কারণে তিনি আপত্তি জানিয়েছেন।
প্রকাশ দাশ গুপ্ত বলেন, হলের নীতিমালা প্রস্তুত থেকে আসবাব তৈরি করা সবকিছুতেই তিনি ছিলেন। এরপরও কোনো কারণ ছাড়া গত ৯ মার্চ তাঁকে এক দিনের নোটিশে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হলে ছাত্রী তোলার দিনে নামফলক মুছে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সংস্কৃতি শোভনীয় নয়।
কী আজব সংস্কৃতি একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের! প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করলেই কি নাম থাকতে হবে কোথাও? থাকলে সেটি কীভাবে থাকবে? হল নির্মাণের অর্থায়নে ভূমিকা রাখায়..? কোথায় কার নাম থাকবে, কীভাবে থাকবে সে বিষয়ে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নীতিমালা নেই? কোনো প্রথা নেই? কাউকে তুষ্ট করতে বা কাউকে জব্দ করতে নাম দেওয়া না দেওয়ার রীতি চলতে থাকবে? পোস্টারে বা ব্যানারে নাম দেওয়া না দেওয়া নিয়ে কলহ-বিবাদের খবর মাঝেমধ্যে পত্রিকায় আসে তার বেশিরভাগই রাজনৈতিক ও স্থানীয় সংগঠন বিষয়ক। কিন্তু একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এমন অবস্থা চলতে পারে না। সেখানে প্রতিটি কাজ ও সিদ্ধান্ত হতে হবে সুচিন্তিত, সুপরিকল্পিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে আমরা আর কত ধরনের বালখিল্য আচরণ দেখার আশা করতে পারি!