নগরে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া গত চব্বিশ ঘণ্টায় আরও ৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৪৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। একই সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। সর্বশেষ নুসরাত নামে নয় মাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একটি নয় মাসের মিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওইদিনই মারা যায় শিশুটি।

এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ সেপ্টেম্বর হালিশহরের বাসিন্দা মরিয়ম, ১৫ সেপ্টেম্বর পলাশ আশ্চার্য, ২১ সেপ্টেম্বর শিউলি রানী (৪০), খুরশিদা বেগম ( ৭০), দিলআরা বেগম রেশমী (৫০), ২৮ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান মিজান (২৬)। ৬ অক্টোবর মুসতাকিন (১০), সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর নুসরাত (৯ মাস) মারা গেছেন। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

চিকিৎসকেদের মতে ডেঙ্গু জ্বরের কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস। ডেঙ্গু জ্বর চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের যে কোনো একটির কারণে হয়ে থাকে যা মশার কামড়ের মাধ্যমে রোগীর শরীরে ছড়ায়। স্ত্রী এডিস মশা ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে এবং সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তিতে বহন করে। আর সেই এডিশ মশা সৃষ্টির জন্য আমরা দায়ী। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমানোর জন্য জন সচেতনতা বাড়াতে হবে।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, প্রতিনিয়ত হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। এখন সবচাইতে বেশি দরকার জনসচেতনতা। তার জন্য বাড়ির আশেপাশে ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে বেশি খেয়াল করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে বা বিশ্রামের সময় মশারি টাঙাতে হবে। ঘরে যদি ডেঙ্গু রোগী থাকে তাকেও মশারির ভেতরে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। জ্বর হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

সম্প্রতি চসিকের ব্যবহৃত কীটনাশকের কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালায় চবির একটি গবেষক দল। সে দলের সদস্য সচিব ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, যতক্ষণ সাধারণ মানুষ সচেতন না হয়, সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। বাড়ির চারপাশের নালা পরিষ্কার না রাখে সেখানে ডেঙ্গুর অগনিত লার্ভা থাকবে। আর জন্ম নেবে শত শত এডিশ মশা, ছড়াবে ডেঙ্গু। তাই চসিকের মশক নিধন ওষুধের উপর নির্ভর না করে বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা, ড্রেন, নালা, টবে যাতে পানি না জমে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখেতে হবে।

এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমকে সম্পর্কে জানতে চাইতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মী আবুল হাসেমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।