তৈরি পোশাকের নতুন বাজার খুঁজুন : প্রধানমন্ত্রী

সুপ্রভাত ডেস্ক »

পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি নতুন বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যারা পোশাক এবং তা রপ্তানি নিয়ে কাজ করছেন, তাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। বিভিন্ন দেশের পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন হয়। তা মাথায় রেখে নতুন পণ্য তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পোশাক ব্যবহার হয়ে থাকে, সেভাবে আমরা নতুন বাজার খুঁজে বের করতে পারি।’ খবর বিডিনিউজের।

বাসস জানিয়েছে, মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ এর অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পোশাক তৈরিতে দেশীয় ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার মেলবন্ধ ঘটানোরও পরামর্শ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে দেশে একটি ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন সময়ে কোন রঙ ও ডিজাইন ব্যবহার হবে, কোনটার চাহিদা বেশি, এটা একটা ঘুর্ণায়মান অবস্থা এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই এ পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’

আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ‘ডিজিটাল ডিভাইসের’ ব্যবহার বড় ভূমিকা রাখবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দেশের জনগণকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুলছে।’

বাংলাদেশের যুব সমাজকে ‘অত্যন্ত দক্ষ’ হিসেবে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তরুণরা ‘সামান্য’ প্রশিক্ষণ পেলেই উন্নতমানের কাজ করতে পারে।

পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের সরকার সব ধরনের সুযোগ করে দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রুত সেবা দিতে বস্ত্র অধিদপ্তরে ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রবর্তন করা হয়েছে এবং ই-নথির মাধ্যমে বস্ত্রশিল্পের উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা এখন সহজে এবং স্বল্প সময়ে তাদের প্রয়োজনীয় সব সেবা পাচ্ছেন।’

সরকারপ্রধান জানান, বস্ত্রখাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) ১৬টি বন্ধ মিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে (পিপিপি) চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের ছয় জেলায় ছয়টি টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও উদ্বোধন করেন।

নতুন উদ্বোধন করা ছয়টি টেক্সটাইল ইনষ্টিটিউট হচ্ছে- ‘শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ’, ‘শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, গৌরনদী, বরিশাল’, ‘শহিদ কামারুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মান্দা, নওগাঁ’, ‘বেগম আমিনা মনসুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ’, ‘ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট’ এবং ‘শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মাদারগঞ্জ, জামালপুর।’

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, এই মন্ত্রণালয়ে সচিব, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ অবদানের জন্য ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্রও দেখানো হয়।