ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয় হতে হবে

মশাবাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে আলাদা। তবে এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে অথবা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) ও ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গেও হতে পারে।
সুপ্রভাতে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১৭ মে চব্বিশ ঘণ্টায় নগরে ১১৪ জন এবং উপজেলায় ২০৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয় চট্টগ্রাম মহানগরীতে চব্বিশ ঘণ্টায় চমেক হাসপাতালে ৭৭ জন, জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, অন্যান্য হাসপাতালে ৫৮ জন ডেঙ্গু রোগে শনাক্ত হন। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পটিয়ায় ৩২ জন। এছাড়া আনোয়ারায় ২৪ জন, মিরসরাইয়ে ১৬ জন, সীতাকু-ে ৫ জন, সন্দ্বীপে ১ জন, ফটিকছড়ি ১২ জন, হাটহাজারীতে ৭ জন, রাউজানে ৭ জন, বোয়ালখালীতে ১৭ জন, বাঁশখালী ১৬ জন, কর্ণফুলীতে ৫ জন, চন্দনাইশ ২৮ জন, সাতকানিয়ায় ১৩ জন ও লোহাগাড়ায় ১১ জন।
ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে একসাথে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও মশামুক্ত করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের শহর আমাদেরকে পরিষ্কার রাখতে হবে। সচেতনতা সৃষ্টিতে সিটি করপোরেশনের যেমন দায়িত্ব আছে ঠিক তেমনি নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়ও কম নেই। নিজেদের সুরক্ষা নিজেকেই নিশ্চিত করতে হবে।
সিটি করপোরেশনের উচিত ঢাকঢোল না পিটিয়ে সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করা। দেরিতে কর্মসূচি শুরু করলে লার্ভা পরিপূর্ণভাবে এডিস মশায় পরিণত হবে। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে। শহরের অধিকাংশ বিস্তৃত জায়গায় যেখানে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, সেগুলো পাবলিক স্পেস হওয়াতে সেখানে শুধু সিটি করপোরেশনই ব্যবস্থা নিতে পারে।
আমরা আশা করবো ডেঙ্গু আরও বিপজ্জনক হওয়ার আগে সিটি করপোরেশন আরও সক্রিয় হবে। অবশ্যই, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থায় মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন, এমনকি তাদের নিজের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়েও এটি করতে হবে।
এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গুর উৎসস্থল ধ্বংসে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করতে না পারলে সামনে বড় বিপদ আসবে। ডেঙ্গু গৃহপালিত মশার কামড়ে হয়। নগরীর চার পাশের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, নোংরা ড্রেন পরিষ্কার না করলে আসছে বর্ষা মৌসুমে মশার প্রজনন অনেক বেড়ে যাবে।