ডায়াবেটিস উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে

একটি জরিপে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে এই রোগ এখন মহামারীর রূপ নিচ্ছে।
ডায়াবেটিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪২ দশমিক ৫ কোটি। অথচ ১৯৮৫ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ কোটি। এখনই এই রোগ প্রতিরোধ করা না গেলে ২০৩৫ সালের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডায়াবেটিস বিশ্বব্যাপী সমস্যা। বিশ্ব জুড়েই এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সবার সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে নগরায়ণের ফলে পরিবর্তিত জীবনযাপনের কারণে সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এই বৃদ্ধির হার উন্নত দেশের তুলনায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশে বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ- কায়িক পরিশ্রম না করা, মোটা বা স্থূলকায় হয়ে যাওয়া, অতিমাত্রায় ফাস্টফুড খাওয়া ও কোমল পানীয় পান করা, অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকা, ধূমপান বা তামাক খাওয়া, গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সমস্যা এবং বাবা-মা অথবা রক্তসম্পর্কীয় নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস থাকা ও ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য মতে, বাংলাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যাদের প্রায় অর্ধেকই নারী। কিন্তু আক্রান্তদের অর্ধেকেরও বেশি মানুষই জানে না, তাদের ডায়াবেটিস আছে। এমনকি দেশে ১০০ জনের মধ্যে ২৬ জন নারীই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ভোগেন। আবার তাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে ৩০ মিনিটের বেশি হাঁটেন না এবং স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করেন না, তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি।
গবেষণায় অংশ নেওয়া তরুণ জনসংখ্যার ২৬ দশমিক ৫ শতাংশের স্থূলতার সমস্যা ছিল এবং নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে স্থূলতার প্রবণতা বেশি। প্রায় ৬১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর ডায়াবেটিস থাকলেও কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, তরুণ জনগোষ্ঠী তাদের খাদ্যাভ্যাসের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশের মতো অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেও এ চিত্র বিরাজ করছে। তাই ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তারা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। জনগণ স্বাস্থ্যসচেতন হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।