এইচএসসি ফলাফল
নিজস্ব প্রতিবেদক »
জিডি ও তদন্ত কমিটিতে আলোচনায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল। সকালে এক ফলাফল ও বিকেলে আরেক ফলাফল হওয়ার কারণ বের করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। একইসাথে থানায় জিডিও করা হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে সচিব ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা প্রফেসর আবদুল আলিম তদন্ত কমিটি গঠন ও জিডি করেছেন।
কিন্তু ফলাফল নিয়ে থানায় কেন জিডি করেছেন জানতে চাইলে প্রফেসর আবদুল আলিম বলেন, ‘বোর্ডের ফলাফল কে বা কারা পরিবর্তন করেছে তা খুঁজে বের করতে এবং কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে বিপদে ফেলতে করেছে কিনা তা নির্ধারণ করতে জিডি করা হয়েছে। একইসাথে সঠিক ঘটনা অনুসন্ধান করতে বোর্ডের বাইরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
এদিকে গত রোববার প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে একজন ছাত্রের এক বিষয়ে ২০০ নম্বরের স্থলে ২০৮ নম্বর এসেছে। আবার বিকেলে তা পরিবর্তিত ফলাফল দেখা যায়। আবার বিষয়ভিত্তিক পাশের হারেও ভুল হয়েছে। কিন্তু বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী এই ফলাফল পরিবর্তন করা যায় কিনা? এখন এই প্রশ্ন উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ফলাফল দুই দফায় পরিবর্তন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন,‘ একজন শিক্ষার্থী দুপুরে একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে। তার অভিযোগটি যাচাই করতে গিয়ে কম্পিউটার সেন্টারে তা সংশোধন করা হয়। কিন্তু সংশোধন করতে গিয়ে ভুল ইনপুট হওয়ায় অনেকের ফলাফল পরিবর্তন হয়ে যায়। পরবর্তীতে তা আবারো সংশোধন করা হয়।’
এই সংশোধন বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্ব পালন করা ও সচিবের দায়িত্বে থাকা প্রফেসর আবদুলর আলীম বলেন, ‘ ফলাফল প্রকাশের পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চাইলেই ফলাফল পরিবর্তন করতে পারবেন না। পরিবর্তনের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে এবং সেখানে চেয়ারম্যানের অনুমোদন থাকতে হবে।’
কিন্তু এই পরিবর্তনে কি চেয়ারম্যানের অনুমোদন নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ভুক্তভোগী হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিফোনে আমাকে ফলাফল পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে। কিন্তু আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছি অথচ বোর্ডের ফলাফল পরিবর্তনের অনুমোদন আমি দেয়ার কথা থাকলেও আমাকে জানানো হয়নি।’
চেয়ারম্যানের অনুমোদন না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, ‘চেয়ারম্যান মহোদয় ঢাকা থাকায় টেলিফোনে এই বিষয়টি জানানো হয়নি। তিনি বোর্ডে এলে জানাতাম। তাই সোমবার বিকেলের পর টেলিফোনে বিষয়টি জানানো হয়।’
এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল আলীম বলেন,‘ বর্তমান ডিজিটাল যুগে টেলিফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে বিষয়টি জানানো যেতো।’
বোর্ড চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে ফলাফল পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রফেসর আবদুল আলীম বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গত রোববার প্রকাশিত ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কিছুটা অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। এই অসঙ্গতি সংশোধন করতে গিয়ে আবারো নতুন করে অসঙ্গতি করা হয়েছে। একইসাথে প্রকাশিত ফলাফলে বিষয় ভিত্তিক পাশের হারেও ভুল করা হয়েছে। এই ভুলও পরবর্তীতে সংশোধন করা হয়।