চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ ঠেকাতে জি সেভেনের ৬০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের ঘোষণা

জি-৭ নেতাদের জার্মানিতে বৈঠক।

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের বিপরীত উদ্যোগ হিসেবে ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন গ্রুপ অফ সেভেন বা জি-৭।

বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে অর্থায়ন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রোববার (২৬ জুন) উদ্যোগের বিষয়টি চূড়ান্ত করে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো।

নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নত স্বাস্থ্য সেবা, লিঙ্গ সমতা ও ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির মতো প্রকল্পগুলো সমর্থনে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ তহবিল ব্যবহার করা হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জি-৭ ভুক্ত অন্যান্য দেশের নেতারা এ বছরের বার্ষিক সম্মেলনে মিলিত হন দক্ষিণ জার্মানির শ্লোস এলমাউতে। ওই বৈঠকেই ‘পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ নামক এই উদ্যোগের ব্যাপারে আবারও সম্মত হন তারা।

জো বাইডেন বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটি সাহায্য বা দাতব্য নয়। এটি এমন একটি বিনিয়োগ, যা প্রত্যেকের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। এর মাধ্যমে দেশগুলো গণতন্ত্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুনির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধাগুলো দেখতে পাবে।”

বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন জানান, চীনের ২০১৩ সালের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের টেকসই বিকল্প গড়ে তোলার জন্য একই সময়ের মধ্যে ইউরোপও ৩০০ বিলিয়ন ইউরো প্রদান করবে তহবিলে।

জি৭ তহবিল থেকে অ্যাঙ্গোলায় ২০০ কোটি ডলার দিয়ে সোলার ফার্ম গড়ে তোলা, ৩২ কোটি ডলার দিয়ে আইভরি কোস্টে হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চার কোটি মার্কিন ডলারে আঞ্চলিক স্তরে বিকল্প শক্তি বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

পশ্চিমা দেশগুলো বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, চীন বিআরআই চাপিয়ে কম আয়ের দেশগুলোকে ঋণজালে আবদ্ধ করছে। দেশটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে বাণিজ্য বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে চীন নিজেই।

ইতালি, কানাডা এবং জাপানের নেতারাও নিজেদের পরিকল্পনার কথা বলেছেন বৈঠকে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইতোমধ্যেই আলাদাভাবে ঘোষণা করেছে দেশগুলো।

এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উপস্থিত না থাকলেও বৈঠকে দেশ দুটির অন্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বেল্ট-রোড ইনিশিয়েটিভের মূল ধারণা হলো, এশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার প্রাচীন সিল্ক রোডের (বাণিজ্য রুট) একটি আধুনিক সংস্করণ তৈরি করা। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ১০০টিরও বেশি দেশ।

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ও ডয়চে ভেলে