চিকিৎসাকেন্দ্র অপ্রতুল, চাপ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর

চাপ বাড়ায় আলাদা ওয়ার্ড চালু করতে বাধ্য হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবুও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মাত্র ৫৫ শয্যার ওই ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ইমারর্জেন্সি ওয়ানস্টেপ, মেডিসিন বিভাগের ১৩, ১৪ ও ১৬ ওয়ার্ডেও বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রোগী ভর্তি ছিল ৭০ জনের বেশি। বাড়তি ২০ জনকে মেঝেতে বেড বিছিয়ে সেবা দেওয়া হয়। একই চিত্র বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসেস (বিআইটিআইডিতে)। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয় এই হাসপাতালে।
চট্টগ্রামে ২১ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ২২৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এটা একদিনের সর্বোচ্চ রেকর্ড। সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ৯ হাজার ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে মারা গেছেন ৭২ জন।
কভিড মহামারির সময়ে আমাদের চিকিৎসাসেবার দৈন্য প্রকটভাবে ধরা পড়েছিল। এরপর অবস্থার সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। এটা আবার বোঝা গেল চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বির কথায়।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজন জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলে তিনি সেখানে বলেন, ‘হাসপাতালে বিভিন্ন উপকরণের সংকট রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এর পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন ধনাঢ্য দানশীল ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকেও এক্ষেত্রে মানবিকভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।
এই অবস্থায় সিটি করপোরেশন যে আশানুরূপ সফলতা দেখাতে পারেনি তা বলা বাহুল্য। মশা নিধনে চসিকের তৎপরতা আরও বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে চমেক হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘হাসপাতালে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিয়মিত তদারকি করলে মশা অনেক কমে যেত’।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদৌস বলেন, যদি বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হতো তাহলে মশার বংশ বৃদ্ধি কমতো। এখন কড়া রোদ উঠেছে। কিন্ত গত ৪-৫ দিন আগেও ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিই যথেষ্ট মশার বংশবৃদ্ধির জন্য। সর্বশেষ বৃষ্টির পর টানা ৩ সপ্তাহ বংশবৃদ্ধি ঘটবে। বৃষ্টি যদি আর না হয় আগামী মাস পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। এরপরে তা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি হলে তা আবার বাড়বে।’
বাস্তব অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে, প্রকৃতির করুণার ওপর ভরসা করা ছাড়া আমাদের আর উপায় নেই।