নিজস্ব প্রতিবেদক »
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম কর্তৃক এক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নির্দেশক্রমে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ এফ এম শামীম উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদ অভিযানে সিএমপির ৩০ পুলিশ সদস্য, পিডিবির প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম উপস্থিত ছিলেন।
কোতোয়ালী থানার আন্দরকিল্লা মৌজার বি.এস. ০১ নম্বর খাস খতিয়ানের বি,এস ৩০২৪ ও ৩০৩০ দাগের ০.১৪৩৬ একর জমি উচ্ছেদ অভিযানে জায়গায় দখলমুক্ত করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত স্থানে জনস্বার্থে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের পরিকল্পনায় ওয়াশ ব্লক স্থাপন, বসার স্থান নির্মাণ ও জনসাধারণের চলাচলের পথ প্রশস্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
উল্লেখ্য, নগরের কোতোয়ালী থানাধীন আন্দরকিল্লা মৌজায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ প্রায় ৩০টি সরকারি অফিস এবং আদালত রয়েছে।
উক্ত আদালত ও অফিসসমূহে প্রায় ৩০০০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিচারক, ৭/৮ হাজার আইনজীবী এবং ৪/৫ হাজার আইনজীবী সহকারীরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এখানে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার লোক সরকারি সেবা নিতে ও বিচারের প্রত্যাশায় যাতায়াত করে। এত বিপুল পরিমাণ লোকজনের যাতায়াতে ছোট্ট একটি রাস্তায় প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এমনকি মুমূর্ষু অসুস্থ কোনো লোককেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এত বিপুল সংখ্যক সেবা প্রত্যাশীকে বিশ্রামাগার, টয়লেট, সুপেয় পানি কিংবা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার মত উন্মুক্ত কোনো স্থান এখানে নেই। আন্দরকিল্লা মৌজার বিএস ০১ নম্বর খাস খতিয়ানে অবস্থিত বি.এস ৩০২৪ ও ৩০৩০ দাগের ০.১৪৩৬ একর সম্পত্তিতে ইতিপূর্বে অনুরূপ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ১৭ (সতের) জন অবৈধ দখলদার বর্ণিত ভূমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছিলেন।
উক্ত সম্পত্তি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও তা তারা ছাড়েনি। পরবর্তীতে উচ্ছেদের জন্য নথি নম্বর ০৯/২০১৭ সৃজন করে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়া হলে তারা মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন নম্বর ১৮৭৪৪/২০১৭ ও ১৮৮৭২/২০১৭ দায়ের করে ;ফলে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
২০২৩ সালের ২৩ ও ২৭ নভেম্বর এবং উভয় রীটের নিষ্পত্তি হওয়ায় গতকাল জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
অবৈধ এ স্থাপনার কারণে এ স্থানে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছিলো। অবৈধ স্থাপনা সমূহ রাস্তাকে খুবই সরু করে ফেলছিলো।
কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে অগ্নি নির্বাপক গাড়ি যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তাছাড়াও জেলা পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ উক্ত রাস্তা ব্যবহার করে শত শত আসামি/কয়েদীদের প্রতিনিয়ত আদালতে আনা নেওয়া করে থাকেন। সেক্ষেত্রে যানজটের কারণে দুর্ধর্ষ কয়েদিদের আদালতে হাজির করা হুমকি স্বরূপ।