নিজস্ব প্রতিবেদক »
কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মাণ হতে যাওয়া কালুরঘাট সেতু নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনে এসে সেতুর উচ্চতা ৭ দশমিক ৫ মিটার করার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং তা নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাথে মীমাংসা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, গতকাল রোববার আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সভায় সেতুর উচ্চতা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পরোক্ষভাবে বিআইডব্লিউটিএ’র মতামত (১২ দশমিক ২ মিটার) মেনে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। এ বিষয়ে চান্দগাঁও-বোয়ালখালী এলাকার সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমি মিটিং এ উপস্থিত ছিলাম না, তবে আলোচনা বিষয়টি জেনেছি। কর্ণফুলী সেতু যেভাবে নির্মিত হয়েছে এই সেতুও তেমন উচ্চতায় নির্মাণের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।’
কিন্তু রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সম্প্রতি কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনে এসে আপনার (সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন) উপস্থিতিতে সেতুর উচ্চতা ৭ দশমিক ৫ মিটার করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একইসাথে সেতুর উচ্চতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে বিরোধ মেটে গেছে বলে জানিয়েছিলেন। এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোছলেম উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘৭ দশমিক ৫ মিটার যদি করতে পারে তাহলে ১২ দশমিক ৫ মিটার করতে বাধা কোথায়?’
সভায় রেলমন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপস্থিত থাকা পরিচালক (সংগ্রহ) মনির ফিরোজীর সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘গতকাল রোববার আন্ত:মন্ত্রলালয়ের সভায় অনেকগুলো প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেখানে কালুরঘাট সেতুও ছিল। সেতুর বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যেই এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের অপর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র গেজেট অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীতে কোনো সেতু নির্মাণ করতে উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার রাখতে হবে। গেজেট আকারে তা লিপিবদ্ধ রয়েছে। যদি তা পরিবর্তন করতে হয় তাহলে গেজেট সংশোধন করতে হবে। আর গেজেট সংশোধন যেহেতু বিআইডব্লিউটিএ করবে না তাই রেলওয়েকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার সেতুর ডিজাইন করতে হবে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন চট্টগ্রামে পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, সেতুটি যে স্থানে নির্মিত হচ্ছে সেখানে জলোচ্ছ্বাস বা ঝড়ের সম্ভাবনা কম, এছাড়া নদীর এই অংশ দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করে না তাই ৭ দশমিক ৫ মিটার উচ্চতা পর্যাপ্ত রাখা হয়েছে। ফলে ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতা রাখার প্রয়োজনীয় নেই।
সেতুর ডিজাইন প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, রেল ও সড়ক সেতু পৃথকভাবে করার যে প্রস্তাবনা ছিলতা এখন আর নেই। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক ও রেল একই সেতুতে হবে এবং সেভাবেই নকশা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এখন দুই লেনের সড়ক এবং ডুয়েল গেজ রেল লাইন বসবে। সড়কে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে এবং ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ২০২২ সালে চলাচল করতে পারবে এই সেতু দিয়ে।