কাউখালীতে জোড়াতালি দেয়া ব্রিজেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যান

স্থানীয়দের ক্ষোভ

প্রতিনিধি, কাউখালী (রাঙামাটি) »

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়ন। প্রায় আঠোরো হাজার মানুষের বসবাস এই ইউনিয়নে। কাউখালী উপজেলা সদর ও আশপাশের বেশ কয়েটি এলাকা নিয়ে সাপ্তাহিক ২দিন যে হাট বসে তা এই ইউনিয়নের কাউখালী বাজারে। কাউখালী উপজেলার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, নির্মাণাধীন টেকনিক্যালয় স্কুল এন্ড কলেজসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে এই ইউনিয়নে।

কাউখালী সদর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরত্বে শুরু এই ইউনিয়নটির। এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের উপজেলা সদরে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক পথ কাউখালী সুগারমিল ভায়া নাইল্যাছড়ি সড়ক। অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সাপ্তাহিক হাটে যেতে হলে এই সড়ক হয়েই যেতে হয় হাটে।

এই সড়কে উপজেলার সাথে কলমপতি ইউনিয়নের যোগাযোগের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজটি। ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেই ভোগান্তিতে পড়ে কামলমতি শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার সাধারণ ও কৃষিজীবী মানুষ।

জানা যায়, ৫/৭ টন ওজন বহনের সক্ষমতা নিয়ে ১৯৮২ সালের শেষের দিকে নির্মিত হয় বেইলি ব্রিজটি। ২০০৪ সালে অতিরিক্ত গাছ বোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়েছিল ব্রিজটি। তখন পুরাতন মালামাল দিয়ে তৈরি করা হয় ব্রিজটি। কয়েক বছর না যেতেই ব্রিজটি যানচলাচলে সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ ২০২১ সালে অতিরিক্ত পাথর বোঝাই ট্রাকসহ আবারও ভেঙে পড়ে ব্রিজটি। প্রায় এক মাসে রাঙামাটি সড়ক বিভাগ কোনো রকম পুরাতন জিনিসপত্রে জোড়াতালি দিয়ে ব্রিজের নিচে লোহার পাইপ ও বাঁশের ঠেস দিয়ে যানচলাচলের অস্থায়ী সমাধান করে। তারপর কেটে গেছে একটি বছর। এসময়েও দেখা যায়নি স্থায়ী কোনো সমাধানের উদ্যোগ। সেই জোড়াতালি দেয়া বেইলি ব্রিজ দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানচলাচল। আর এতে ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা। ব্রিজটি দ্রুত স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ না নিলে রয়েছে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কাও।

রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কাউখালী উপজেলা সদরের সাথে কলমপতি ইউনিয়নের মধ্য সড়কে সংযোগ করেছে পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজটি। পাথর বোঝাই ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়া ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করার পর ঝুঁকিপূর্ণই রয়ে গেছে। ব্রিজটি মাঝ বরাবর যাতে দেবে না যায় তাই লোহার পাইপ ও বাঁশ দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে। বেইলি ব্রিজগুলো সচরাচর সরলরেখার ন্যায় সোজা থাকতে দেখা গেলেও এটি বক্ররেখার মত ঢেউ ঢেউ আঁকাবাঁকা।

কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যজাই মারমা জানান, ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ৫ টনের অধিক ভারী যানচলাচলে নিষেধ থাকলেও সাইনবোর্ডেই আটকে আছে সড়ক বিভাগের এ নিষেধাজ্ঞা। গভীর রাতে ৫ টনের অধিক ভারী ইটের গাড়িসহ বিভিন্ন মালামালের গাড়ি পারাপার হয়। দিনে এলাকার মানুষ এ বিষয়ে তদারকি করলেও রাতে তো আর আমারা পাহারা দিতে পারি না। এ সময় তিনি ব্রিজটি নতুন করে তৈরির দাবি জানান।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনুর সালেহীন জানান, ব্রিজটি যেঝুঁকিপূর্ণ, এটি আমাদের নজরে আছে। ব্রিজটি লম্বা হওয়ায় মাঝখানে ঠেস দেয়া হয়েছে। এটির প্রয়োজনীয় মেরামত করা হবে। এছাড়া এই ব্রিজটিসহ সব বেইলি ব্রিজ স্থায়ী কংক্রিট ব্রিজ করার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছি।