টিকা পেতে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকলেও বিদেশ থেকে এসে আটকেপড়া প্রবাসীরা করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছেন। টিকা না দেওয়ায় তারা কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারছেন না। সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে দুই ডোজ টিকা গ্রহণের সনদ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের টিকা কেন্দ্রে প্রবাসীরা গেলে তাদের জনশক্তি কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। প্রবাসীরা বলছেন, তাদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, পাসপোর্ট দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপসে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা, সুরক্ষা অ্যাপস দ্রুত খূলে দিতেও তারা বলেন। স্থানীয় জনশক্তি কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জানান, সুরক্ষা অ্যাপসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া টিকা নিবন্ধনে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে, বিকল্প পন্থার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রয়োজন হবে বলে তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানান।
প্রবাসীদের অনেকে দেশে এসে করোনার কারণে আটকা পড়েছেন, ছুটি নিয়ে এসেছেন অনেকে, ছুটি শেষে কিংবা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তাদের ফিরে যেতে হবে, দুই ডোজ টিকা নিতে সময়ও লাগবে। তাই তাদের দ্রুত টিকা দেওয়া না হলে অনেকে কাজে ফিরে যেতে পারবেন না। নানা সমস্যা জটিলতায় পড়ে যাবেন, অনেকের যাওয়া হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও তাদের পাসপোর্টকে পরিচিতি ধরে টিকা নিবন্ধনের দাবি অযৌক্তিক নয়। এখন টিকা নিবন্ধন কার্যক্রম স্থগিত আছে। প্রবাসীদের সমস্যা বিবেচনা করে টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা প্রয়োজন। এমনিতেই করোনাকালীন লকডাউন ও নানা বিধিনিষেধের কারণে বিভিন্ন দেশে যেতে প্রবাসীরা বিভিন্ন সময় নানা ঝামেলায় ও দুর্ভোগে পড়েন। এসব বিবরণ প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনার সময়ও প্রবাসী কর্মীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। সুতরাং প্রবাসীদের সমস্যা সংকট দ্রুত সমাধানে মন্ত্রণালয়ের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলির প্রবাসীদের সমস্যা-সমাধানে অধিক মনোযোগ দেওয়া উচিত। মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রবাসীরা নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন, সুতরাং তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকার আওতায় আনা প্রয়োজন।
যেহেতু দুই ডোজ টিকা নিতে হবে এবং তাতে সময়ও লাগবে সুতরাং দ্রুততম সময়ে তাদের নিবন্ধন করে টিকা কার্যক্রম শুরু করলে প্রবাসীরা যথাসময়ে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার নিশ্চিতি পাবেন। রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে প্রবাসীদের মূল্যায়ন করে জনশক্তি মন্ত্রণালয় অবিলম্বে নির্দেশনা দিয়ে প্রবাসীদের সমস্যা লাঘবে এগিয়ে আসুকÑআমরা তা চাই।
মতামত সম্পাদকীয়