করোনায় নতুন উপসর্গ

মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ

রুমন ভট্টাচার্য  : <<
দেশে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণের হার। সেই সাথে করোনায় নতুন উপসর্গ পরিলক্ষিত হচ্ছে রোগীদের মধ্যে। তবে এতকিছুর পরও মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতির কারণে আগামী এপ্রিল থেকে জুন মাসে সংক্রমণ আরো বেড়ে গিয়ে গেলো বছরের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণে নতুন ধরনের উপসর্গ পরিলক্ষিত হচ্ছে। জ্বর ছাড়া চোখের প্রদাহ, শরীর ব্যথা, চামড়া লাল হয়ে যাওয়া, হাত ও পায়ের আঙ্গুল সাদা হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এখন থেকে সতর্ক না হলে সামনের পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে। বাইরে গেলে অবশ্যই মুখে মাস্ক ও স্যানিটাইজ করার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘গত বছরের এই সময়ে করোনা সংক্রমণ বেড়েছিল, এবারও ঠিক একইসময়ে বাড়তে শুরু করেছে। স্বাস্থ্যবিধি ঠিকভাবে না মানার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া অনেকে টিকা নিয়ে অধিক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। এখন থেকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। মাস্ক পড়ার কোনো বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনে সংক্রমণ আরও বাড়বে।’
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রজত শংকর রায় বিশ্বাস সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আনকমন উপসর্গ এখন কমন হিসেবে দেখা দিয়েছে। করোনা সংক্রমণে নতুন ধরনের উপসর্গ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই যেমন জ্বর ছাড়া চোখের প্রদাহ, গলা ব্যথা, শরীর ব্যথা, চামড়া লাল হয়ে যাওয়া, হাত ও পায়ের আঙ্গুল সাদা হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা ইত্যাদি। তাই সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক এবং স্যানিটাইজ নিয়মিত করতে হবে। না হয় কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে।’
তিনি জানান, ‘চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল আইসিইউ বেড খালি নেই। হাইফ্লো চলছে ১০টির মত। ১২০ টি বেডের মধ্যে ৯০টি রোগীতে পূর্ণ। চিকিৎসকেরা এখন হিমশিম খাচ্ছে সেবা দিতে। নতুন করে চিকিৎসক নেওয়া হচ্ছে।’
৫০০ শয্যাবিশিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহজাদ হোসাইন মাসুম গত ১৩ মার্চ তার ফেসবুক পেইজে লেখেন, কোভিড পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। মাস দুয়েক একটু শ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। এক সপ্তাহের মাঝে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আক্ষরিকভাবে রোগীদের বাঁচিতে রাখতে আমরা এখন যুদ্ধ করছি এবং হেরে যাচ্ছি।‘ আমাদের ফোন আবার ব্যস্ত হয়ে গেছে চেনা-অচেনা মানুষের কলে। খুব কষ্ট হয়, বেশির ক্ষেত্রেই আমাদের কিছু করার থাকে না।‘ তিনি সকলকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।