৮ ধরনের মসলার দাম কমলো
রুমন ভটাচার্য
ঈদুল আজহার আগে গরম মসলার চাহিদা থাকে আকাশছোঁয়া। দামও বাড়ে হু হু করে। এতে বেকায়দায় পড়তে হয় ক্রেতাদের। তবে এবার করোনা’র কারণে উল্টোচিত্র মসলার বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারে পড়তি দর এবং চাহিদা কমায় পাইকারি বাজারেও মসলার দাম কমছে। খুচরো বাজারে এখনও মসলার চাহিদা তেমন একটা বাড়েনি। চলতি মাসের শেষের দিকে এসে আরো কমেছে গরম মসলার দাম।
জানা যায়, গরম মসলা পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। করোনা’র কারণে বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে দাম পড়ে গেছে মসলার। ঠিক একই কারণে দেশেও ব্যবহার কমেছে। দেশে গরম মসলা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সামাজিক ও করপোরেট অনুষ্ঠান এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয়। করোনা’র কারণে বেশ কয়েকমাস ধরে এসব খাতে মসলার চাহিদা নেই। তবে চাহিদা কমলেও আমদানি কমেনি। পর্যাপ্ত মজুত থাকায় বিক্রি করে বাজার থেকে বের হতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা। এতে দাম পড়তির দিকে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাহিদা থাকলেও দাম বাড়বে না। কারণ, মসলার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।আবার বাজারেও ক্রেতা নেই।
জানা যায়, দেশে আট ধরনের গরম মসলা বেচাকেনা হয়। এগুলো হলো- এলাচ, জিরা, দারচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ, জায়ফল, জয়ত্রী ও তারামসলা। এসব মসলার ৮২ শতাংশই আমদানি হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয় কমবেশি ১৮ শতাংশ।
গরম মসলার বাজারদর
গতকাল পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, আট ধরনের গরম মসলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম এলাচের। করোনা’র আগে পাইকারি বাজারে কেজিতে এই মসলার দাম উঠেছিল প্রায় চার হাজার টাকা। জুলাইয়ের শুরুতে তা দুহাজার ৬০০ টাকায় নেমে আসে। এখন আরও কমে মানভেদে দুহাজার ৪০০ থেকে দুহাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জিরার দাম কেজি ২৮৫ টাকা থেকে কমে ২৫৫ টাকায় নেমেছে। গোলমরিচের দাম ৫৯০ টাকা থেকে কমে ৩৫০ টাকা এখন। লবঙ্গের দাম ৭০০ টাকা থেকে ৬৩০ টাকায় এসেছে। চীনা দারচিনি বিক্রি হচ্ছে ২৫৫ টাকায়। চলতি মাসের শুরুতে ছিল ২৯০ টাকা। জয়ত্রীর কেজি দুহাজার টাকা। আগে ছিল প্রায় দুহাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া জায়ফল ও তারামসলার দামও কিছুটা কমেছে।
এদিকে খুচরো বাজারে এলাচ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার, দারচিনি ৪০০, লবঙ্গ ৮০০, জিরা ৩৫০, গোলমরিচ ৪৮০ ও জয়ত্রী ২ হাজার দুশ টাকায়।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মহিউদ্দীন সুপ্রভাতকে বলেন, গরম মসলার বাজার এবার ঠান্ডা। গতবারের চেয়ে এবার বাজারের চিত্র ভিন্ন। করোনা’র কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে কোথাও বিয়ে, মেজবান ও সামাজিক অনুষ্ঠান নেই। হোটেল ও রেস্তোরাঁ খুললেও আগের মতো খদ্দের ও চাহিদা নেই। আসন্ন ঈদুল আজহায় মানুষ কোরবানি করবে কি না, তাও অনিশ্চিত। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন লোকসানে আছেন। বেচাবিক্রি ও চাহিদা কমলেও বাজারে মসলার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে তাই দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই।’