ঊর্ধ্বমুখী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা দরকার

দিন দিন ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। এবার আগেভাগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে।
এক মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি। গত মে মাসে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩ জন। জুন মাসে আক্রান্তের এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮২ জনে। হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৫ গুণের বেশি। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও হয়েছে জুন মাসে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ১০ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মাঝে জুনেই মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। তিনজনের মৃত্যু হয় জানুয়ারিতে। চলতি মাসের প্রথম দিনে মৃত্যু হয়েছে একজনের। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি মৌসুমে (জানুয়ারি থেকে ২ জুলাই) মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় মোট ৫৫৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৭৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন, মার্চ মাসে ১২ জন, এপ্রিলে ১৮ জন এবং মে মাসে ৫৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে সর্বোচ্চ ২৮২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে; যা এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ।
মাত্র শুরু হওয়া জুলাই মাসে আরো আগ্রাসী রূপের আভাস দিচ্ছে ডেঙ্গু। প্রথম দুদিনেই ৯১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মাঝে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৫ জন; যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ। এছাড়া আগের দিন শনাক্ত হয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ জন। সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের পাশাপাশি জুলাইয়ের প্রথম দিনেই মৃত্যু হয়েছে আক্রান্ত একজনের।
মূলত বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। কিন্তু এবার পুরোদমে বর্ষা নামার আগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। যা দিন দিন বাড়ছে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে বলে মনে করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, কিছুদিন বেশ গরম পড়লেও ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন পাত্রে (জায়গায়) পানি জমে মশার লার্ভার সৃষ্টি হচ্ছে। যেখানে এডিস মশার প্রজনন (বংশ বিস্তার) ঘটছে। মূলত এ কারণেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে মশার লার্ভা ধ্বংস করা, এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। মোট কথা মশা নিধন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা। আর মশা নিধনের এ কাজ স্বাস্থ্য বিভাগের নয়। সিটি কর্পোরেশন বিষয়টি দেখবে। স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে।