আশা জাগিয়েও ইতিহাস গড়তে পারল না আফগানিস্তান

সুপ্রভাত ডেস্ক
এশিয়া কাপে টিকে থাকতে হলে শ্রীলঙ্কার দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে হবে ৩৭.১ ওভারে। এমন কঠিন সমীকরণ মাথায় নিয়ে লঙ্কানদের দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামে আফগানিস্তান। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে কখনো ২৭৪ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি রশিদ খানরা। এশিয়া কাপে টিকে থাকতে হলে লাহোরে ইতিহাস গড়তে হবে আফগানদের। শুরুতে খেই হারালেও মিডেল ওভারে মোহাম্মদ নবীর ৩২ বলে ৬৫ রানের ইনিংসে ম্যাচে ফিরে আফগানিস্তান। কিন্তু শেষ দিকে লোয়ার অর্ডারের প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। লঙ্কান বোলারদের দায়িত্বশীল বোলিংয়ে ২ রানে ম্যাচ জিতে নেয় দাসুন শানাকার দল।
২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই চাপে পড়ে আফগানিস্তান। ওপেনার রহমানুল্লাহ তৃতীয় ওভারেই ফিরেন সাজঘরে। কাশুন রাজিথার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৪ রান করে ফিরেন গুরবাজ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ক্রিজে নামেন গুল্বাদিন নায়েব।
এই অলরাউন্ডার রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু থেকেই ব্যাট চালিয়ে যান। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান রাজিথার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন। পাওয়ার প্লেতে ক্যামিও ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নায়েবও।
দলীয় ৫০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে এক প্রকার ছিটকে যায় আফগানিস্তান। কিন্তু চতুর্থ উইকেট জুটিতে ম্যাচের হাল ধরেন রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। দলীয় ১২১ রানে রহমত শাহ ফিরে গেলেও আফগানদের ম্যাচে ফেরায় মোহাম্মদ নবী।
এই ডানহাতি ব্যাটারের ৩২ বলে ৬৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে চলে যায় রশিদ খানরা। ২৭তম ওভারে শেষ দিকে মাহেশ থিকসানার স্পিনে নবী কাটা পড়লেও আফগানরা খেই হারায় নি। করিম জানাত, নাজিবুল্লাহ জাদরান ও রশিদ খানের ছোট ক্যামিও ইনিংসে ইতিহাস গড়ার হাতছানি দিয়েও ব্যর্থ হয় আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৩৮তম ওভারে ২৮৯ রানে পুরো দল গুটিয়ে যায়। ফলে ২ রানের জয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত হয় শ্রীলঙ্কা।
এদিকে আগে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানদের দারুণ সূচনা এনে দেন দিনুথ ক্রুনারত্নে ও পাথুম নিসাঙ্কা। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬২ রান তুলেন দুই ওপেনার। কিন্তু মিডেল ওভারে আফগান পেসার গুল্বাদিন নায়েবের বোলিং তোপে চাপে পড়ে শানাকার দল। খবর ঢাকামেইল।
৬৩ রানে শূন্য উইকেট থেকে ৮৬ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলের ধরেন চারিথ আসালঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। এ দুজন মিলে দেখেশুনে খেলে গড়েন সফল এক জুটি। তবে ৯৯ বলে গড়া ১০২ রানের জুটি ভাঙে আসালাঙ্কার বিদায়ে। রশিদ খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ৪৩ বলে ৩৬ রান করেই সাজঘরে ফিরেন তিনি।
এরপর ধনঞ্জায়া ডি সিলভাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন মেন্ডিস। তবে মাত্র ১৯ বলে ১৪ রান করেই সাজঘর ফিরে যান ডি সিলভা। এদিকে দেখেশুনে খেলে ব্যক্তিগত শতকের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন মেন্ডিস। তবে সেঞ্চুরির খুব নিকটে গিয়েও দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েই ফিরতে হয় তাকে।
রশিদ খানের করা বলে সোজা উড়িয়ে মেরেছিলেন দাশুন শানাকা। আফগান এই স্পিনার ক্যাচ নিতে না পারলেও তার হাতে লেগে বল আঘাত করে স্ট্যাম্পে। এ সময় মেন্ডিস ছিলেন দাগের বাইরে। ফলে ৮৪ বল খেলে ৯২ রান করে লঙ্কানদের ইনিংস গড়ে দেয়া মেন্ডিসকে ফিরতে হয় সেঞ্চুরি না করেই। একই ওভারে শানাকাও ফিরেছেন রশিদের বলে বোল্ড হয়ে।
এদিকে লঙ্কানদের ব্যাটিং ইনিংসের শেষ দিকে বোলার দুনিথ ওয়াল্লালাগে এবং মাহেশ থিকসানার যৌথ ৬৪ রানে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রানের সংগ্রহ গড়ে শ্রীলঙ্কা।